« on: March 15, 2018, 05:19:54 PM »
ব্যস্ততা, লোকবলের অভাব ইত্যাদি নানা কারণে শহরবাসী নিজের ময়লা পোশাকটি লন্ড্রিতে দিয়ে আসতে পারেন না। এই সুযোগে আপনি প্রতিষ্ঠা করতে পারেন হোম ডেলিভারি লন্ড্রি সার্ভিস। বিস্তারিত জানাচ্ছেন মোস্তফা কামাল বিপ্লব
কাজটা খুব সহজ। আশপাশের বাসা-বাড়ি থেকে ময়লা কাপড় নিয়ে আসতে হবে। সেই কাপড় গ্রাহকের চাহিদা অনুসারে সাধারণ ওয়াশ, ড্রাই ওয়াশ, আয়রন ইত্যাদি করে যথাসময়ে গ্রাহকের বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসতে হবে। চাইলে যে কেউ নিজেকে এ পেশায় নিয়োজিত করতে পারেন। শিক্ষাগত যোগ্যতার বাধ্যবাধকতা নেই। লন্ড্রিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকলে ভালো, না থাকলে অভিজ্ঞ কর্মচারী প্রয়োজন হবে।
যা যা লাগবে
লন্ড্রি শপের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ লাইনসহ একটি দোকান। আবাসিক এলাকায় মূল রাস্তার পাশে কমপক্ষে ৩০০ বর্গ ফুটের একটি দোকান হলেই চলবে। ট্রেড লাইসেন্স, দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্র ইত্যাদি সংগ্রহে রাখতে হবে। দোকানের বেশির ভাগ অংশ কাপড় সংরক্ষণের তাক দিয়ে সাজাতে হবে। এর পাশাপাশি থাকবে আয়রন করার টেবিল। পুঁজি বেশি থাকলে ড্রাইওয়াশ করার সরঞ্জাম কিনে নিতে পারেন। নইলে ড্রাইওয়াশের অর্ডারগুলো অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে করিয়ে আনতে পারবেন।
ময়লা কাপড় ধোয়ার জন্য আলাদা জায়গা লাগবে। সেখানে কর্মচারী দিয়ে চুক্তিভিত্তিকভাবে কাপড় পরিষ্কার করাতে পারবেন। এ ধরনের কর্মচারীরা কাপড়ের প্রকারভেদে পারিশ্রমিক নিয়ে থাকেন। শার্ট, প্যান্ট, ব্লেজার, শাড়ি ইত্যাদি পোশাকের ওয়াশের জন্য সাধারণত ৫ থেকে ২০ টাকা পারিশ্রমিক দিতে হয়।
অর্ডার সংগ্রহ এবং ডেলিভারি দেওয়ার জন্য দুজন ডেলিভারিম্যান প্রয়োজন হবে। ডেলিভারিম্যান নিয়োগ দেওয়ার সময় তাদের কাছ থেকে জামানত নিতে ভুলবেন না। ডেলিভারিম্যানদের সাইকেল থাকলে কাজের গতি বাড়বে। ব্যবসা দাঁড়িয়ে গেলে কাভার্ড ভ্যানের সাহায্যে কাজ করলে সুবিধা হবে। ডেলিভারিম্যানদের মাসে আড়াই থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন দিতে হবে।
একটি হোম ডেলিভারি লন্ড্রি শপের জন্য প্রাথমিকভাবে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা প্রয়োজন হবে। দোকানের অ্যাডভান্স এবং ভাড়া, ডেকোরেশন, আয়রন এবং আয়রন করার টেবিল, কর্মচারীদের বেতন এবং দোকানের প্রচার বাবদ এই টাকা খরচ হবে। ড্রাইওয়াশ করার সরঞ্জাম কিনতে চাইলে আরো ৪০ হাজার টাকা লাগবে।
প্রচার
হোম ডেলিভারি লন্ড্রি সার্ভিস প্রতিষ্ঠার পর স্থানীয় গ্রাহকদের আপনার প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানাতে হবে। এ জন্য লিফলেট, ব্যানার কিংবা পোস্টার ব্যবহার করতে পারেন। প্রচারের সময় দোকানের মোবাইল নম্বর সংযুক্ত করতে হবে। এই নির্দিষ্ট নম্বরে গ্রাহক কাজের অর্ডার দেবেন এবং কাজ সম্পর্কে খোঁজখবর নেবেন। গ্রাহককে দেওয়া কমিটমেন্ট সব সময় পালন করতে হবে। যে তারিখে কাপড় পৌঁছে দেওয়ার কথা সে তারিখেই কাপড় পৌঁছাতে হবে। কমিটমেন্ট রক্ষা করতে পারলে অতিদ্রুত দোকানের কথা চারদিকে ছড়িয়ে যাবে।
আয়
লন্ড্রির দোকানে নির্ধারিত সেবা মূল্যের ২০ শতাংশ লাভ থাকে। মাসের আয় নির্ভর করে সেবার পরিধির ওপর। কাজ বেশি হলে আয় বাড়বে। নতুন অবস্থায় একটি লন্ড্রি দোকানে মাসে ৮ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা আয় হবে। কাজ বাড়লে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় হতে পারে।
ব্যান্ডবক্সের লন্ড্রি শপ
পুরনো কাপড় কিংবা কম্বল ধোয়ার জন্য যেতে হয় লন্ড্রিতে। এ ছাড়া রং ও রিপুর কাজ তো আছেই। নাগরিক জীবনে লন্ড্রি এখন অপরিহার্য। তবে এসব লন্ড্রির মধ্যে আছে কিছু বিখ্যাত চেইন শপ। তাদের মধ্যে ব্যান্ডবক্স অন্যতম। নিজ এলাকায় ডিলারশিপ নিয়ে আপনিও দিতে পারেন এমন একটি লন্ড্রি শপ। বিস্তারিত জানাচ্ছেন সিদ্ধার্থ সাই
সাভারের নরসিংহপুরে আছে ব্যান্ডবক্সের কেন্দ্রীয় ওয়াশ কারখানা। সারা দেশের সব আউটলেট থেকে কাপড় সংগৃহীত হয়ে সেখানে ওয়াশ হয়ে আবার আউটলেটে ফেরত যায়। সারা দেশে প্রায় ৪৪টির মতো আউটলেট আছে ব্যান্ডবক্সের। ঢাকায় ৩৮টি, নারায়ণগঞ্জে দুটি এবং চট্টগ্রাম ও সিলেটেও আউটলেট আছে।
কারা করতে পারবে
দোকানের জন্য মোটামুটি ৫০০ বর্গফুটের জায়গা হলেই হলো। এর সঙ্গে ট্রেড লাইসেন্স, দোকানের চুক্তিপত্রের কাগজপত্র, দোকানের প্রয়োজনীয় ডেকোরেশন তো লাগবেই। দোকানের স্থান অভিজাত এলাকায় হলে ভালো হয়। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ ডিলারশিপের দরখাস্ত করতে হবে ব্যান্ডবক্সের পরিচালক বরাবর। পরে কম্পানি থেকে লোক এসে আপনার দোকানের অবস্থান, ব্যবসায়ের সম্ভাব্যতা দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন।
আউটলেট চালানোর নিয়ম
দোকানের সৌন্দর্যবর্ধন, স্লিপ, কার্ড, দোকানের আনুষঙ্গিক সব কিছু আপনাকেই করে নিতে হবে। কম্পানির কাজ হবে ময়লা কাপড় নিয়ে যাওয়া এবং ধোয়া কাপড় পেঁৗছে দেওয়া। সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দোকান খোলা থাকবে। কর্মচারীর বেতনও আপনাকেই চালাতে হবে। গুলশান ও বনানীতে দিনে ২৫০ থেকে ৩০০ পিসের অর্ডার পাওয়া যায়; কিন্তু হাটখোলার মতো জায়গাগুলোতে ১৫০-এর বেশি কাপড়ের অর্ডার পাওয়া যায় না। সেভাবেই চিন্তা করে নিতে হবে।
ব্যান্ডবক্সে কাপড় ধোয়ার খরচ
সাধারণত ১৫ শতাংশ লাভ রেখে সার্ভিস চার্জ ঠিক করা হয়। শাড়ি ১১০ টাকা থেকে শুরু করে প্রকারভেদে ৪০০ টাকা পর্যন্ত। শার্ট ৫৫ টাকা, পাঞ্জাবি ৬০ থেকে ৭০, স্যুট ২২০, ব্লেজার ১৭০, দরজা-জানালার পর্দা ২৫০ থেকে ৩০০, কম্বল ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা নিয়ে থাকে। ঢাকার ভেতরে সাধারণত চার দিনে ধোয়া কাপড় ডেলিভারি দেওয়া হয়ে থাকে।
সূত্র: কালের কন্ঠ
Logged
Regards,
Md. Rashadul Islam
Operation Manager
Bangladesh Venture Capital Ltd.