Author Topic: Light of Hope  (Read 7662 times)

Rashadul Islam

  • Administrator
  • Newbie
  • *****
  • Posts: 45
  • Karma: +0/-0
    • View Profile
Light of Hope
« on: March 05, 2018, 08:24:02 PM »
মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড চালু করেছে ‘উদয়ন’ নামে নতুন একটি প্রকল্প। ব্যাংকটি এ প্রকল্পের আওতায় দেশের শিক্ষিত মেধাবী তরুণদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার নিমিত্তে ব্যবসা শুরুর জন্য অর্থায়ন করছে। মার্কেন্টাইল ব্যাংক এরই মধ্যে নতুন কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে সিড ক্যাপিটাল হিসেবে অর্থ বিনিয়োগ করেছে। সোস্যাল এন্টারপ্রাইজ কোম্পানি ‘লাইট অব হোপ’ এ ব্যাংকের বিনিয়োগ পেয়েছে। সম্প্রতি বণিক বার্তার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত জানান পরিচালক মুকুল আলম। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বকুল রায়


লাইট অব হোপ কী ধরনের সেবা দিচ্ছে?
ডিজিটাল শিক্ষাভিত্তিক একটি স্টার্টআপ লাইট অব হোপ। শিক্ষা ব্যবস্থার দায়িত্ব হলো শিশুদের ভবিষ্যত্ পৃথিবীর জন্য উপযোগী করে তৈরি করা। যাতে তারা তাদের দক্ষতা দিয়ে সমাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে। প্রযুক্তির কারণে পৃথিবী এখন এত দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে যে, বিদ্যমান শিক্ষা ব্যবস্থা সে তুলনায় অনেক সেকেলে এবং অনেকাংশে শিশুদের প্রস্তুত করতে ব্যর্থ হচ্ছে। তাহলে শিশুদের কীভাবে আমরা ভবিষ্যত্ পৃথিবীর জন্য প্রস্তুত করব?

বিভিন্ন প্রযুক্তির সহায়তায় আমরা শিশুদের সৃজনশীলতা ও সমস্যা সমাধানের দক্ষতা, মনঃসামাজিক বুদ্ধিমত্তা ও নৈতিকতা শেখাতে কাজ করছি। আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যবস্থায় শিশুদের এসব বিষয়ে শিক্ষা দেয়া হয় না। বিশ্বব্যাংকের একটি জরিপে উঠে এসেছে, যেসব শিশু এখন প্রাইমারি পর্যায় পড়ছে, তার ৭০-৮০ শতাংশ ভবিষ্যতে এমন একটি চাকরিতে ঢুকবে, যার কোনো অস্তিত্ব এখন নেই। অর্থাত্ সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

লাইট অব হোপ শুধু শিক্ষার্থী নয়, শিক্ষক ও অভিভাবকদের উন্নয়নেও কাজ করছে।

সোস্যাল এন্টারপ্রাইজ উদ্যোগ নিয়ে আগ্রহী হলেন কেন?

শুরুতে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন। কেউ অর্থ সহায়তা দিলে কাজ করা সম্ভব হয়। এছাড়া অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে খারাপ দিক হলো আর্থিক সহায়তাকারীর ইচ্ছামতো কাজ করতে হয়। শেষ পর্যন্ত আমরা সিদ্ধান্ত নিই অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কার্যক্রম জোরদার সম্ভব নয়। কাজেই সোস্যাল এন্টারপ্রাইজ স্টার্টআপ হিসেবে কার্যক্রম শুরু করি।

শিশুর ভবিষ্যত্ গড়তে কোন ধরনের ডিজিটাল কনটেন্ট সরবরাহ করছেন?
উন্নত বিশ্বের একটি শিশু যেসব সুবিধা পাচ্ছে, আমাদের দেশের শিশুরা সেসব সুবিধা পাচ্ছে না। বাইরের শিশুরা বিভিন্ন ডিভাইসের মাধ্যমে যে ধরনের ডিজিটাল শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে, দেশে সে সুযোগ নেই। আমরা এ ব্যবধানটা দূর করতে কাজ করছি। চেষ্টা করছি কীভাবে খুব স্বল্প মূল্যে অফলাইন এবং অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমে দেশব্যাপী আইসিটিনির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা ছড়িয়ে দেয়া যায়।

শিশুদের হাতে স্মার্টফোন বা ইন্টারনেট দেয়া যাবে না, এ কথার কোনো ভিত্তি নেই। বরং নিশ্চিত করতে হবে আপনার শিশু ইন্টারনেটে কী দেখছে। লাইট অব হোপ শিশুর শিক্ষার জন্য ডিজিটাল কনটেন্ট উন্নয়ন করছে। আমাদের ওয়েবসাইটে ডিজিটাল শিশু শিক্ষার কনটেন্টের একটা বড় অনলাইন স্টোর হয়ে গেছে। শিশুরা যাতে বিজ্ঞান নিয়ে আগ্রহী হয়, সেজন্য আমরা ‘রোবটিকস’ নামে একটি কোর্স চালু করেছি।

আপনারা এ পর্যন্ত কতগুলো প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও শিশুতোষ বই দিয়ে লাইব্রেরি এবং মোবাইল বিজ্ঞানাগার করে দিতে পেরেছেন?
সৌরবিদ্যুত্চালিত মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম নিয়ে আমাদের প্রত্যাশা অনেক বড় ছিল। কিন্তু সে অনুযায়ী এগোতে পারিনি। এটা খুব বেশি ব্যয়বহুল ছিল। কারো সহায়তায় আমরা প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিটি প্রাথমিক স্কুলে সৌরবিদ্যুত্চালিত মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম করে দেব সেটা সম্ভব হয়নি। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে এ পর্যন্ত ছয়টি স্কুলে সৌরবিদ্যুত্চালিত মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম করে দিতে পেরেছি। ১০৬টি স্কুলে শিশুতোষ বই দিয়ে লাইব্রেরি এবং পাঁচটি মোবাইল বিজ্ঞানাগার করে দেয়া সম্ভব হয়েছে। এছাড়া আমরা দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ২৮টি স্পুটনিক (পোর্টেবল সৌরবিদ্যুত্চালিত মাল্টিমিডিয়া সেটআপ) সরবরাহ করেছি।

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্কুলগুলোর শিক্ষকদের নিয়ে কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করেন?

হ্যাঁ, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রাথমিক স্কুলগুলোর শিক্ষকদের নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছি। শুরুতেই বলেছিলাম, লাইট অব হোপ একটি সোস্যাল এন্টারপ্রাইজ স্টার্টআপ। কাজেই সোস্যাল এন্টারপ্রাইজ প্রতিষ্ঠানের মজার দিক হলো, রাজস্ব আয়ের পাশাপাশি এমন কিছু কাজ থাকতে হয়, যা সমাজে প্রভাব সৃষ্টি করে। কাজেই আমরা শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। চেষ্টা করি প্রশিক্ষণগুলোয় অংশ নেয়া শিক্ষকদের ২০ শতাংশ প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত স্কুলগুলোর শিক্ষকদের রাখার। প্রশিক্ষণ দানের জন্য আমরা কখনো কখনো বিভিন্ন অঞ্চলে যাই। কিছু ক্ষেত্রে আমাদের সেন্টারে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করি।

কার্যক্রম পরিচালনায় সরকারি বা বেসরকারি কোনো সহায়তা পেয়েছেন কিনা?
লাইট অব হোপ বেসরকারি খাত থেকে বেশকিছু সহায়তা পেয়েছে। সরকারি সহায়তা বলতে আমরা বাংলাদেশ ন্যাশনাল কমিশন ফর ইউনেস্কোর (বিএনসিইউ) একটি প্রোগ্রামে অংশ নিয়েছিলাম। সেখানে কোরিয়ান ন্যাশনাল কমিশন ফর ইউনেস্কো (কেএনসিইউ) আমাদের কিছু তহবিল দেয়। যেটা দিয়ে আমরা কার্যক্রম সম্প্রসারণ করি। অস্ট্রেলিয়ান একটি কোম্পানি স্পার্কের সঙ্গে আমরা যৌথভাবে কাজ করেছি। পরবর্তীতে এ প্রতিষ্ঠান থেকেও আমরা তহবিল পাই। স্পার্ক এখন পর্যন্ত আমাদের বিভিন্ন দিক থেকে পরামর্শ সহায়তা দিয়ে আসছে।

লাইট অব হোপের কার্যক্রম ঘিরে কোনো বাধার সম্মুখীন হতে হয় কিনা?
বিভিন্ন ধরনের বাধার সম্মুখীন হতে হয়। কারণ আমরা যে ধরনের কাজ করি, তা বাংলাদেশে আর কোনো প্রতিষ্ঠান করে না। বৈশ্বিকভাবেও লাইট অব হোপের মতো কাজ করছে, তেমন কোনো প্রতিষ্ঠান পাইনি। কাজেই কোনো একটি বিষয় নিয়ে একেবারে নতুন করে শুরু করতে হয়। তা কাজে লাগাতে হয় এবং ছোটখাটো ভুলত্রুটিগুলো ধীরে ধীরে ঠিক করে নিতে হয়। আমরা যে বিষয় নিয়ে কাজ করছি, তার কোনো মডেল নেই, যে আমরা সেটা অনুসরণ করব। এটা একটা বড় ধরনের বাধা। আরেকটি বড় বাধা হলো, আমরা যে কাজটা করছি সেটা মানুষকে বোঝানো। কারণ মা-বাবাদের মাইন্ড সেটআপ একটা নির্দিষ্ট জায়গায় স্থির থাকে। তারা সবসময় চান শিশুকে স্কুলে প্রথম, দ্বিতীয় বা তৃতীয় হতে হবে। কিন্তু প্রতিটি শিশু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্মায়। তার নিজের মতো করে কিছু করার ক্ষমতা থাকে।

লাইট অব হোপ ‘কিডস টাইম’ ব্র্যান্ড নিয়ে বলুন।

‘কিডস টাইম’ হলো লাইট অব হোপের একটি পৃথক উইং। এটি শিশুদের সৃজনশীলতা বৃদ্ধির আফটার স্কুল প্রোগ্রাম। কিডস টাইম এখন রাজধানীতে চারটি সেন্টারে চলছে। চট্টগ্রামেও আমাদের একটি সেন্টার চালু করা হয়েছে। সাভারে একটি সেন্টার চালুর পর্যায়ে রয়েছে। কিডস টাইম উইং হলো চার থেকে ১২ বছরের শিশুদের জন্য। তাদের ভবিষ্যতের প্রয়োজনীয় দক্ষতা বৃদ্ধির আফটার স্কুল প্রোগ্রাম।

লাইট অব হোপ নিয়ে ভবিষ্যত্ পরিকল্পনা কী?
লাইট অব হোপ এখন বাংলাদেশকেন্দ্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বাংলাদেশের পাশাপাশি বৈশ্বিকভাবে এর কার্যক্রম ছড়িয়ে দিতে চাই।

মার্কেন্টাইল ব্যাংকের উদয়ন প্রকল্প আপনার স্বপ্ন বাস্তবায়নে কতটুকু সহায়তা দিতে পেরেছে?
মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেডকে ধন্যবাদ দিতে চাই। স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোর জন্য ব্যাংক মানে খুব জটিল কিছু। এজন্য স্টার্টআপ কোম্পানি সহজে ব্যাংকের কাছে যেতে চায় না। ব্যাংকগুলোও অনেক সময় আমাদের কথা শুনতে চায় না। এক কথায় উভয় দিক থেকে একটা নেতিবাচক ধারণা কাজ করে। কিন্তু মার্কেন্টাইল ব্যাংক সে ধারণা বদলে দিয়েছে। ব্যাংকটি আমাদের আর্থিক সহায়তা নয়, আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। বিষয়টা এ রকম যে, তোমরা তো স্টার্টআপ, তোমাদের কেউ এখনো স্বীকৃতি দেয়নি। কিন্তু আমরা তোমাদের বিশ্বাস করি। তোমরা এগিয়ে যাও, আমরা তোমাদের সঙ্গেই আছি। দেশের একটি প্রতিষ্ঠিত ব্যাংকের কাছ থেকে এমন সমর্থন পাওয়ার চেয়ে বড় আর কী হতে পারে?

« Last Edit: March 15, 2018, 11:59:44 PM by Rashadul Islam »
Regards,
Md. Rashadul Islam
Operation Manager
Bangladesh Venture Capital Ltd.