Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Topics - Rashadul Islam

Pages: 1 [2] 3
16
বাংলাদেশের কৃষকদের জন্য ফুল উৎপাদন এখন অনেক বেশি লাভজনক হয়ে উঠেছে। অর্থসাশ্রয় ও মুনাফার দিক থেকে এখন ফুল চাষই সবচেয়ে বেশি এগিয়ে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের কৃষকদের জন্য ফুল চাষেই লাভ সবচেয়ে বেশি। এমনকি এ মুনাফার পরিমাণ ধান ও মাছের তুলনায়ও বেশি।

কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশ। দেশের মোট জিডিপিতে কৃষির অবদান প্রায় ২০ দশমিক ২৪ শতাংশ। জীবিকা অর্জনের জন্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষি ও কৃষিসংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে জড়িত অনেকেই। কিন্তু দেশের কৃষকদের মধ্যে একদিক থেকে যেমন দারিদ্র্য রয়েছে, তেমনি রয়েছে অশিক্ষাও। এ কারণে ঋণ নিতে গিয়ে প্রায়ই নানা জটিলতায় পড়ছেন তারা। আর্থসামাজিক, পরিবেশ ও প্রযুক্তিগত বিভিন্ন কারণে নির্দিষ্ট সময় পরপর উৎপাদন ব্যবসায় পরিবর্তন আনছেন কৃষক। এ সময় যথাযথ তথ্যের অভাবের কারণে অনেকেই উপযুক্ত ও লাভজনক ব্যবসা বেছে নিতে পারেন না।

সাম্প্রতিক কালে দেশের কৃষকরা ধানের সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য ফসল যেমন— মাছ বা ফুল উৎপাদন করছেন। বৃহত্তর ময়মনসিংহের জেলাগুলো ধানি জমি ও বদ্ধ জলে মাছ উৎপাদনে বেশ নাম করেছে। এখানকার অনেক কৃষকই এ কারণে তাদের চাষযোগ্য জমি কাটানোয় বেশ আগ্রহী হচ্ছেন। সম্প্রতি ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে, কৃষকরা বোরো চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন এবং সেখানে মত্স্য চাষের প্রসার ঘটছে। আগের বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে, বোরো ধান উৎপাদন আমনের তুলনায় বেশি লাভজনক। কিন্তু বোরো মৌসুমে ধানের যথাযথ দাম না পাওয়ায় ও বাড়তি খরচের কারণে কৃষকের প্রত্যাশা ও আশা-আকাঙ্ক্ষা ভেঙে পড়ছে। সমস্যাটির প্রধান কারণগুলো হলো— জমির অভাব, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তন, অকার্যকর ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি, মানসম্মত বীজের অভাব ও অপর্যাপ্ত ঋণসহায়তা। চালের দামেও এর উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়েছে। ফলস্বরূপ, বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মাছ ও ফুল উৎপাদন বর্তমানে ধান উৎপাদনের তুলনায় বেশি লাভজনক হয়ে উঠেছে।

গবেষণার জন্য জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে, মত্স্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে মিশ্র পদ্ধতিতে চাষের জন্য কৃষকদের প্রতি হেক্টরে গড় মুনাফা থাকে প্রায় ৮১ হাজার ৯২৩ টাকা। অন্যতম লাভজনক মাছ শিং মাছ উৎপাদনের ক্ষেত্রে হেক্টরপ্রতি মুনাফা দাঁড়ায় ৫ লাখ ৪১ হাজার ৬৪১ টাকা। হেক্টরপ্রতি মুনাফার দিক দিয়ে বোরো ও আমন ধানচাষীরাই সবচেয়ে বেশি পিছিয়ে। বোরো ধান উৎপাদনে হেক্টরপ্রতি মুনাফা থাকে গড়ে ৩০ হাজার ৩২৪ টাকা। আমনের ক্ষেত্রে এ মুনাফার পরিমাণ ১৬ হাজার ২৩১ টাকা। অন্যদিকে ফুল উৎপাদনের মাধ্যমে যশোরের গদখালীর কৃষকরা হেক্টরপ্রতি মুনাফা করছেন গড়ে প্রায় ১৬ লাখ ৫৭ হাজার ৮১৮ টাকা করে।

বাংলাদেশের মাছ, ফুল ও ধান উৎপাদনের তুলনামূলক বিশ্লেষণের ভিত্তিতে গবেষণায় উঠে আসে, ফুল চাষেই মুনাফা সর্বাধিক। মাছ ও ধান উৎপাদনের তুলনায় এতে সাশ্রয়ও বেশি। বাংলাদেশে মাছ ও ধান উৎপাদনের অন্যতম সীমাবদ্ধতা হলো উভয় ক্ষেত্রে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগের অভাব। এছাড়া রফতানিযোগ্য উৎপাদনের বাড়তি খরচ, বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগের আবশ্যকতা ও বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ কৃষির এ দুই উপখাতে উৎপাদন কমে যাওয়ার জন্য দায়ী। কিন্তু ধান ও মাছ উৎপাদনে উন্নত প্রযুক্তি যেমন— জৈব প্রযুক্তি, জিনতত্ত্ব প্রকৌশল ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ক্ষেত্রে অগ্রগতির মাধ্যমে পর্যাপ্ত মাছ ও ধান উৎপাদন সমস্যার সমাধান সম্ভব। এটি বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য মঙ্গলজনক হবে বলে আশা করা যায়। একই সঙ্গে দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য ফুল চাষ ও এর উন্নয়নের জন্য সরকারের বিশেষ প্রণোদনামূলক কার্যক্রমও হাতে নেয়া উচিত।

দেখা গেছে, সার প্রয়োগের ব্যয় সবচেয়ে কম ফুল চাষেই। বোরো ধান উৎপাদনের জন্য সার বাবদ হেক্টরপ্রতি গড় খরচ পড়ে ১৫ হাজার ১৮৬ টাকা। অন্যদিকে আমন ধানের ক্ষেত্রে এ খরচ পড়ে ১৪ হাজার ৩৪২ টাকা। যশোর জেলার গদখালী ইউনিয়নে বোরো ধান চাষের জন্য চাষীদের গড় খরচ পড়ে হেক্টরপ্রতি ১ লাখ ৪ হাজার ৫৩৮ টাকা। আমন ধান চাষে খরচ পড়ে ৭৪ হাজার ২৫৫ টাকা। মাছ চাষের ক্ষেত্রে সারের খরচ পড়ে প্রতি হেক্টরে মিশ্র মাছ চাষের ক্ষেত্রে ৬৭ হাজার ৬৮৬ টাকা। শিং মাছের ক্ষেত্রে এ খরচ ১৯ হাজার ৫৪০ টাকা। পুষ্টিকর ও গুণগত মানসম্পন্ন মাছ চাষের জন্য উন্নত মানের সার ও ওষুধের প্রয়োজন হয়। এ কারণে মাছ চাষে ব্যবহূত সারের হেক্টরপ্রতি খরচ তুলনামূলকভাবে সবচেয়ে বেশি। ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে দেখা গেছে, এখানে মিশ্র পদ্ধতিতে মাছ চাষের জন্য প্রতি হেক্টর গড়ে প্রায় ১ লাখ ৮৫ হাজার ৩৭৩ টাকা খরচ হয়। অন্যদিকে শিং মাছ চাষে প্রতি হেক্টরে খরচ পড়ে ৬ লাখ ৭৪ হাজার ২৩৫ টাকা। অন্যদিকে ফুল চাষের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, এতে ব্যবহূত সারের খরচ পড়ে হেক্টরপ্রতি ১২ হাজার ৭৪১ টাকা করে। গদখালীর কৃষকদের ফুল চাষে হেক্টরপ্রতি খরচ হয় ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৭৫ টাকা।

বাংলাদেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে মত্স্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। মত্স্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মতে, মোট কৃষি খাতের ৩৫-৪০ শতাংশ উৎপাদন এ খাতে হয়, যা মোট জিডিপির ৭-৮ শতাংশ। সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীসহ সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে চাহিদা মেটানোর জন্য বাংলাদেশের কৃষকরা বাণিজ্যিক মাত্রায় ফুল চাষ শুরু করেছেন। যশোর জেলার গদখালী ইউনিয়নে কৃষকরা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক উভয় বাজারের জন্য উন্নত মানের ফুল চাষ শুরু করেছেন। এতে নিয়োজিত রয়েছেন প্রায় সাড়ে চার হাজার কৃষক। বর্তমানে বাংলাদেশের মোট ফুল উৎপাদনের অর্ধেকেরও বেশি আসছে যশোর থেকে। উৎপাদন উপযোগী মাটি ও আবহাওয়ার কারণে এ অঞ্চলের জমি ধান ও ফুল উৎপাদনের জন্য উপযুক্ত। একইভাবে ধানের জমিতে মাছও উৎপাদন করা যায়। কিন্তু অপর্যাপ্ত ও অনুন্নত পরিবহন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা এ খাতের উন্নয়নের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মত্স্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের অভাবে কৃষকরা প্রত্যাশিত   মুনাফা অর্জন করতে পারছেন না।

লাভজনক হলেও ফুল চাষ এখন বাংলাদেশে বর্ধনশীল পর্যায়ে রয়েছে। দেশে ফুলের বাজারের সবচেয়ে বড় আড়ত হিসেবে পরিচিত শাহবাগ। কিন্তু শাহবাগের ফুলের বাজারের অদক্ষ অবকাঠামোগত ব্যবস্থা ও ফুল সংরক্ষণ ব্যবস্থার অভাব, উৎপাদনস্থল থেকে শাহবাগ পর্যন্ত ফুলের সময়সাপেক্ষ পরিবহন ব্যবস্থা এবং স্থানীয় বাজারে আমদানি করা প্লাস্টিক ফুলের অধিক সরবরাহের কারণে দেশী তাজা ফুলের যথাযথ মূল্যায়ন হচ্ছে না। আবার ফুলচাষীদের অনেক সময় কার্গোসংক্রান্ত জটিলতা ও রফতানি বাজারের অনিশ্চয়তার কারণেও বাধার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে কৃষি ফসলের পরিবর্তে মাছ বা ফুল চাষের মুনাফাযোগ্যতা ও স্থানীয় পর্যায়ে আর্থসামাজিক উন্নয়নে এর প্রভাব জানার জন্য তুলনামূলক বিশ্লেষণ সংশ্লিষ্ট সবার জন্যই মঙ্গলজনক।

 
লেখক: ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী। উল্লিখিত গবেষণাটি তারই করা। গবেষণা তত্ত্বাবধান করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আসরারুল ইসলাম চৌধুরী


source: http://bonikbarta.net

17
জনসাধারণের চাহিদা পূরণকল্পে তথা নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ, বিনিয়োগ নিশ্চিতকরণ, উৎপাদন বৃদ্ধি ও কৃষিভিত্তিক শিল্প কারখানা স্থাপনসহ ব্যাপক পরিসরে চাহিদা পূরণ করার জন্য বর্তমানে আমদানী নিয়ন্ত্রণ বিধি ও পদ্ধতি সহজীকরণ এবং উদার করা হয়েছে। সে অনুসারে পণ্য আমদানী প্রক্রিয়ায় গুরুত্ব পদক্ষেপগুলোকে প্রধানত দুটি ভাগে বিভক্ত করা যায়, যেমনঃ

বিদেশ হতে দেশে পণ্য আনয়ন, এবং
পণ্যের মূল্য বৈদেশিক মুদ্রায় পরিশোধকরণ।
বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের আমদানী ও রপ্তানী নিয়ন্ত্রক কতর্ৃক পণ্য আমদানী বিষয়াবলী নিয়ন্ত্রীত হয়ে থাকে। আমদানী মূল্য পরিশোধ সংক্রান্ত নিয়মনীতি বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ বিভাগ নিয়ন্ত্রীত হয়।

আমদানীর জন্য লাইসেন্সীং পদ্ধতি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র- বিদেশ থেকে পণ্য আমদানী করতে হলে প্রধান আমদানী ও রপ্তানী নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে পণ্য আমদানীর লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে। অধুনা আমদানী কার্যক্রম বৃদ্ধি পাবার ফলে কতিপয় বাণিজ্যিক ব্যাংককে উক্ত লাইসেন্সীং সম্পাদনের ক্ষেত্রে বানিজ্যিক ব্যাংক সমূহ এদতরুপে ব্যাংক এলসিএ ফরম বা 'লেটার অব ক্রেডিট অথরাইজেশন ফরম' এর হতে এলসিএ ফরম সংগ্রহ করতে হবে। নিম্নোক্ত দলিলপত্র এরুপ আবেদনপত্রের সাথে ব্যাংকে দাখিল করার পর ব্যাংক এলসিএ ফরম এবং সংযুক্ত কাগজপত্র সতর্কতার সাথে যাচাই করে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিবন্ধন ইউনিটের নিকট তা অগ্রায়ন করবে। আমদানী লাইসেন্সীং এর আবেদনপত্রের সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসমূহ নিম্নরুপঃ

(ক) আমদানীকারক কর্তৃক পূরণকৃত এবং স্বাক্ষরিত এলসি এর দরখাস্ত;
(খ) ক্রয়-বিক্রয় চুক্তি, ইন্ডেন্ট অথবা প্রোফরমা ইনভয়েস;
(গ) ইনসু্যরেন্স কভার নোট;
(ঘ) চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি অথবা অনুমোদিত বাণিজ্যি সমিতির সদস্যপদ সনদ;
(ঙ)আয়কর পরিশোধ করা হয়েছে মর্মে ঘোষণাপত্র;
(চ) আমদানী নিবন্ধন সনদের সবায়ন ফিস পরিশোধের দলিল।

উল্লেখ্য যে,পণ্য বিনিময়/ঋণ/মঞ্জুরী ইত্যাদির আওতায় আমদানীর ক্ষেত্র বাংলাদেশের নিজস্ব তহবিল হতে যদি বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় না হয়ে থাকে তবে উক্তরুপ নিবন্ধন করা আবশ্যক নহে।

ক্রয় চুক্তি সম্পাদন
লাইসেন্স প্রাপ্ত হলে আমদানীকারকের পরবতর্ী কাজ হল বিদেশী বিক্রেতা বা সরবরাহকারীদের সাথে সরাসরি বা স্থানীয় প্রতিনিধির মাধ্যমে ক্রয় চুক্তিতে উপনীত হওয়া। সাধারণতঃ বিক্রেতা বা সরবরাহকারী কর্তৃক ইসু্যকৃত প্রোফরমা ইনভয়েস/ইন্ডেট এর মাধ্যমে এরুপ ক্রয় চুক্তি সম্পাদিত হয় এবং এই প্রোফরমায় বর্ণিত চুক্তির শর্তাবলী মেনে নিয়ে তাতে আমদানীকারকের স্বাক্ষর থাকতে হয়। উল্লেখ্য যে, সি এন্ড এফ মূল্য ১০ লাখ টাকার উপরে হলে আমদানীকারককে সরবরাহকারী স্থানীয় এজেন্টের সাথে চুক্তি করলে চলবে কিন্তুু উক্ত সি এন্ড এফ মূল্য ১০ লক্ষ টাকার অধিক হলে অনুরুপ চুক্তি সরাসরি সরবরাহকারীর সাথে করতে এবং এক্ষেত্রে লাইসেন্সীং কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের প্রয়োজন হবে।

ঋণপত্র খোলা (এল সি ওপেনিং)
এল/সি খোলা বলতে আবেদনকারী/আমদানীকারক এর অনুরোধে ব্যাংক কতর্ৃক রপ্তানীকারক/বেনিফিসিয়ারীর বরাবরে এলসি ইসু্য করাকে বুঝায়। যে ব্যাংকের মাধ্যমে এলসি খোলা হয় তাকে এলসি ওপেনিং ব্যাংক বা ইসু্যইং ব্যাংক বলে। আবেদন কারী প্রাথমিকভাবে তার নিজস্ব লেটার প্যাডে লিখিতভাবে তার মনোনীত ব্যাংকের নিকট এলসি খোলার ইচ্ছা ব্যক্ত করবে। অর্থাৎ সরবরাহকারী সাথে আমদানীকারীর পণ্যের চুক্তি স্বাক্ষরিত হবার পর আমানিকারক মনোনীত ব্যাংকের পক্ষে পরিবহনের সকল ঝুঁকি কভার করে নৌ বীমা পলিসি সংগ্রহ করে সরবরাহকারী পণ্য মূল্য পরিশোধের নিশ্চয়তা দিয়ে তার অনুকূলে স্থানীয় ব্যাংকে এলসি খোলার আবেদন করবে। বাংলাদেশে শুধুমাত্র অমোচনীয় এলসি এর মাধ্যমে আমদানী করা যায়। ফলে আমদানীকারক বিদেশী সরবরাহকারী সাথে ক্রয়চুক্তি যথাযথভাবে সম্পন্ন করা সমীচীন। তাই বলা হয়ে থাকে যে,'আমদানী লাইসেন্স ও স্থির ক্রয় চুক্তিপত্র সহ এলসি খুলতে হয়।' এরুপ ক্রয় চুক্তির সাথে সঙ্গতি বিধান করে এলসিএ ফরম পূরণ এবং আমদানী ঋণের ব্যবস্থা নিতে হবে। উপরোক্তভাবে মনোনীত স্থানীয় ব্যাংকের নিকট এলসি খোলার আবেদন করার পর সংশ্লিষ্ট ব্যাংক যে সকল বিষয় নিশ্চিত করবে তা হলঃ

* নৌ বীমাপত্রের আমদানী পণ্যের বর্ণনা, পণ্য বোঝাইকরণের বন্দরের নাম, পণ্য খালাসের বন্দরে নাম এবং জাহাজীকরণের বন্দরের নাম, পণ্য খালাসের বন্দরের নাম এবং জাহাজীকরণের বর্ণিত পদ্ধতি যথাযথ বা সঠিক কিনা;
* বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনে অনুমোদনযোগ্য নয় এরুপ কোন ধারা বা শর্ত এলসিতে রয়েছে কিনা;
* ক্রয় চুক্তি এবং ঋণপত্রে প্রস্তাবিত আমদানী পণ্যের মূল্য অভিন্নভাবে বর্ণিত হয়েছে কিনা;
* আবেদনে আবেদনকারী স্বাক্ষর সঠিক কিনা;
* বর্ণিত পণ্য আমদানী নীতি অনুসারে আমদানী করা যায় কীনা;
* এলসিতে বাংলাদেশ ব্যাংক কতর্ৃক ইসু্যকৃত ইন্ডেন্টরের রেজিষ্ট্রেশন নং, ক্রয় চুক্তিপত্র বা প্রোফরমা ইনভয়েস নং বর্ণিত হয়েছে কিনা;
* জাহাজীকরণের সর্বশেষ তারিখ, যা লাইসেন্সীং কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত তা এলসিতে বর্ণিত আছে কিনা।
*বিক্রয় চুক্তি অনুসারে প্রয়োজনীয় বীমা কভারেজ আছে কিনা;

এলসি ও তৎসংশ্লিষ্ট উপরোক্ত বিষয়াদি সহ অন্যান্য তথ্যাদি সঠিক থাকলে এলসি খোলার জন্য যে মার্জিন দরকার তা অনুমোদন করে অবশিষ্ঠাংশ আমদানী ঋণ হিসেবে মঞ্জুর করা হয়। মার্জিত অফারিং সিট প্রণয়নের জন্য যে সকল বিষয় উল্লেখ করা দরকার তা হলঃ

* দায় ও সম্পদ বিবরণী;
* আমদানী পণ্যের নাম;
* পরিশোধের সময়সীমা;
* পরিশোধ তালিকা;
* ব্যবসারে ধরন;
*ব্যাংক হিসাবের বিবরণ;
* এলসির জন্য প্রয়োজনীয় ঋণের পরিমাণ;
* জামানতের ধরন;
* হিসাব বিবরণী;
* তহবিলের উৎস এবং ব্যবহার

এলসি সংশোধন-
এলসি খোলার পর উহার কোন সংশোধনের আবশ্যকতা দেখা দিলে ইউসিপিইসি এর ধারা ৬ অনুসারে এলসির সাথে সংশ্লিষ্ট পক্ষগণের সম্মতি নিয়ে তাতে সংশোধনী আনয়ন করা যাবে। এলসির কোন সংশোধনীর জন্য ক্রেতা-বিক্রেতা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংক(সমূহ) এর ঐক্যমত দরকারঅ এলসি শংশোধনীর বিবরণী আমদানীাকরকের অনুরোধ ক্রমে এবং সরবরাহকারীর সম্মতি নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক সকল পক্ষকে সরবরাহ করবে। সাধারণতঃনিম্মে বর্ণিত হেতুবাদে একটি এলসিতে সংশোধন আসতে পারে,যেমনঃ

* এলসির শর্ত এবং সময়সীমার সাথে ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যকার সম্পাদিত চুক্তিগত পার্থক্য উদ্ভূত হলে;
* পরিবর্তিত পরিস্থিতি বা দেশের রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক ঝুঁকি প্রেক্ষিতে যদি চুক্তির কোন শর্ত পরিবর্তন আবশ্যক হয়ে পড়ে।

দলিলাদি নিরীক্ষা/পরীক্ষাকরণ-
চুক্তিভুক্ত পণ্য জাহাজে প্রেরণ করার পর বিক্রেতাকে এলসিতে বর্ণিত কাগজপত্র সংগ্রহ ও প্রস্তুুত করতে হয়। এ পর্যায়ে তাকে শিপিং কোম্পানী থেকে বিল অব লেডিং সংগ্রহ, ইনভয়েস, সার্টিফিকেট অব অরিজিন, প্যাকিং লিষ্ট, বিনিময় বিল ইত্যাদি প্রস্তুত করে ব্যাংক দাখিল করতে হয়। এলসির শর্ত মোতাবেক ব্যাংক তার গ্রাহকের কাছ থেকে কাগজপত্র গ্রহন করে নেগোশিয়েট করে থাকে। নেগোশিয়েটিং ব্যাংক এক্ষেত্রে ওপেনিং ব্যাংকের নির্দেশ মোতাবেক রপ্তানীকারক কর্তৃক বিনিময় বিল ও উক্ত দাখিলকৃত সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র যথাযথভাবে যাচাই করে রপ্তানীকারককে সাথে সাথে পাওনা পরিশোধ করে দিবে এবং নেগোশিয়েটিং ব্যাংক যে পরিমাণ অর্থ রপ্তানীকারককে প্রদান করেছে উক্ত পরিমাণ অর্থ এবং কমিশনসহ যদি এলসিতে বর্ণিত তৃতীয় কোন ব্যাংকের উল্লেখ থাকে তার নিকট দাবী করবে। উক্ত দাবী অনুসারে তৃতীয় ব্যাংক নেগোশিয়েটিং ব্যাংকের দাবী মিটিয়ে দিবে। এরুপ তৃতীয় ব্যাংক রিইমবার্সিং ব্যাংক হিসেবে পরিচিত । এ পর্যায়ে নেগোশিয়েটিং ব্যাংক রপ্তানীকারক কর্তৃক গৃহীত সকল দলিলাদি ওপেনিং ব্যাংকের নিকট অগ্রায়ন করবে। ওপেনিং ব্যাংক এলসি শর্ত মোতাবেক সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র তিনটি ধাপে পরীক্ষা নিরিক্ষা করে দেখবে এ ব্যাপারে নেগোশিয়েটিং ব্যাংক কাগজপত্র সাঠিকভাবে বেনিফিসিয়ারী কর্তৃক দাখিল করা হয়েছে কিনা তা ইসু্যইং ব্যাংককে নিশ্চিত করার পর ইসু্যইং ব্যাংক এলসি এর শর্ত অনুসারে এগুলো যথাযথ যাচাই বাছাই করে ইউসিপিডিসি অনুসারে নিম্নোক্ত কাগজপত্রাদি নিশ্চিত করবে।

ইসুইং ব্যাংক কর্তৃক এলসি সহ যে সকল দলিলাদি পরীক্ষা নিরীক্ষা করবে-

* কাগজপত্রসমূহ নির্ধারিত তারিখের মধ্যে নেগোসিয়েট করা হয়েছে কিনা;
*এলসিতে বর্ণিত অর্থের পরিমাণ দলিলে বর্ণিত অর্থের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ রয়েছে কিনা;
*এলসি যেভাবে চাওয়া হয়েছে বিনিময় বিল সেভাবে ড্র করা হয়েছে কিনা;
* মালামালের সবিস্তার বর্ণনা, প্যাকেট সংখ্যা, ওজন, মূল্য ইত্যাদি সঠিক কিনা;
* বিল অব লেডিং নিখুঁত কিনা; মাল জাহাজে তোলা হয়েছে কিনা;
* মাশুল পরিশোধিত ও ইসু্যইং ব্যাংকের নির্দেশে এনডোর্স করা হয়েছে কিনা;
* পণ্য বোঝাইকরণের ও পণ্য খালাসের বন্দরদ্বয়ের নাম সঠিকভাবে উল্লেখিত আছে কিনা;
* পণ্য প্রাপকের নাম, জাহাজীকরণের তারিখ এলসি এলসি অনুসারে করা হয়েছে কিনা;
* শিপিং কোম্পানী বা তার প্রতিনিধি কর্তৃক বিল অব লেডিং যথাযথভাবে স্বাক্ষরিত কিনা এবং ইনভয়েসের বর্ণনা অনুসরে তা করা হয়েছে কিনা;
* এলসি তে উল্লেখিত সার্টিফিকেট অব অরিজিন সঠিক আছে কিনা;
* ওজন তালিকা , প্যাকিং লিষ্ট, পি এস আই, পিএসআই সর্টিফিকেট ইত্যাদি দলিলাদি এলসির শর্ত অনুসারে সমন্বিত কিনা।

দাখিলকৃত কাগজপত্রের উপরোক্ত কোন তথ্যে গরমিল দেখা দিলে ব্যাংক যথাশীঘ্র সংশ্লিষ্ট আমদানিকারক আলোচ্য তা অবহিত করে এর গ্রহণযোগ্যতা যাচাই করবে। যদি আমদানীকারক আলোচ্য কোন তথ্য অগ্রহণযোগ্য মর্মে মত দেয় তবে উক্ত পণ্য সম্পর্কে গৃহীতব্য ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চেয়ে নেগোশিয়েটিং ব্যাংকের নিকট বার্তা পাঠাবে। আর উপরোক্ত তথ্যাবলী ঠিক বা বেঠিক থাকুক আমদানীকারক তা গ্রহণযোগ্য মর্মে মত দিলে তা ব্যাংকের বইতে পিএডি ডেবিট করে। এভাবে পরীক্ষার পর ব্যাংক আমদানীকারকের দেশের মুদ্রাকে অসিফিয়াল রেট এর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রায় রুপান্তরিত করবে এবং অতঃপর এলসি খোলার সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

এলসিতে সম্ভাব্য ক্রটি বা অসামঞ্জস্যতাসমূহ-
এলসিতে সম্ভাব্য ক্রটি বা অসামঞ্জস্যতাসমূহ নিম্নোক্তভাবে হতে পারে, যেমনঃ
* ইনভয়েসে শিপমেন্ট এর মেয়াদ সম্পর্কিত তথ্য অনুল্লেখিত;
* ইনভয়েস চার্জ অন্তভর্ূক্ত হওয়া সত্বেও এলসিতে তার নির্দেশ অনুপস্থিত;
* পণ্যের বিবরণ, চিহ্ন, ও নম্বর সকল দলিলের চাহিদা অনুসারে অসামঞ্জস্যপূর্ণ;
* পণ্য বোঝাইকরণের সময়সীমা;
* বীমার দলিলপত্রের তারিখ বিল অব লেডিং এর তারিখের মধ্যে গরমিল;
* বীমার অর্থ অপর্যাপ্ত;
* বীমার সার্টিফিকেট অনুমোদিত;
* বীমার ঝুঁকি আচ্ছাদন সুনির্দিষ্টভাবে বর্ণিত হয়নি;
* ভাড়া পূর্ব পরিশোধিত হয়েছে মর্মে বিল অব লেডিং এ কোন তথ্য অজ্ঞাত;
* এলসিতে প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্রের মধ্যে কতিপয় কাগজপত্র সংযুক্ত করা হয়নি;
* এলসি ও ইনভয়েসের পণ্যের বর্ণনা অভিন্ন নহে;
* এলসিটি ওভারড্রন কিনা;
* এলসির সময়সীমা;
* সাধারণতঃ এলসিতে যে সকল সম্ভাব্য ক্রটি থাকতে পারে তা নিম্মরুপঃ
* অন বোর্ড নোটিফিকেশন এ তারিখ বা স্বাক্ষর অনুপস্থিত;
* ড্রাফটস ও ইনভয়েসে বর্ণিত অর্থের গরমিল;
* ড্রাফটটিতে স্বাক্ষরযুক্ত নহে;
* ড্রাফটটি যথার্থ নহে;
* বিল অব লেডিং এ পণ্য জাহাজীকরণ সংক্রান্ত তথ্য নাই;
* বিল অব লেডিংটি অপরিচ্ছন্ন;
* বিল অব লেডিংটি অসঠিক ও অননুমোদিত

18
ব্যবসা শুরু করতে গেলে নানান রকমের লিগ্যাল কাগজপত্রের প্রয়োজন পড়ে। এসব কাগজপত্র কোথা থেকে করব, কিভাবে করব এইসব নিয়ে নতুন উদ্যোক্তাদের থাকে নানান রকম প্রশ্ন এবং ভিতি। আমি মনে করি একজন উদ্যোক্তাকে সর্বপ্রথম যে গুণটি অর্জন করা উচিত তা হলো "তার প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক তথ্যগুলো খুঁজে বের করার ক্ষমতা" ! ইন্টারনেটের দৌরাত্ত্বে আজকাল তথ্য পাওয়া আর কোনো জটিল বিষয় নয়। এরপর ঐ উদ্যোক্তার উচিত হবে তার প্রয়োজন অনুযায়ী প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত সমূহ যথাযথভাবে স্ট্যাডি করা এবং যে বিষয়গুলো সে বুঝবে না সেগুলো মার্ক করে কোনো বিশেষজ্ঞ'র পরামর্শ নেয়া।

এই তথ্য উপাত্ত খুঁজে পেতে সহযোগিতা করার জন্যেই আমার এই ডক। কর্মশালায় অনেককে পেন ড্রাইভে করে দিয়ে দিয়েছি কিন্তু যারা পেন ড্রাইভ নিয়ে যান নি অথবা গ্রুপের যারা কর্মশালায় অংশগ্রহণ করতে পারেন নি তাদের জন্যে আজকে আবার আপলোড করে দিলাম।

কারো কাছে কোনো ভুলভ্রান্তি নজরে এলে বা নতুন কোনো তথ্য উপাত্ত পেলে তা সংশোধন ও সংযোজন করে দেয়ার জন্যে বিশেষ অনুরোধ থাকল। নতুন প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত আমি পরবর্তীতে এই ডকে নিয়মিত ভাবে সংযোজন করতে চেষ্টা করব।

ট্রেড লাইসেন্স এর জন্যেঃ
http://www.dhakacity.org/ index.php

কোম্পানি রেজিষ্ট্রেশন এর জন্যেঃ
http://www.roc.gov.bd/
http://www.roc.gov.bd:7781/

নেম ক্লিয়ারেন্স যাচাই এর জন্যেঃ
http://www.roc.gov.bd:7781/ psp/nc_search?p_user_id

VAT, TAX & Customs সংক্রান্ত তথ্য ও সহযোগিতার জন্যেঃ
http://www.nbr.gov.bd/Portal/ HomePage.aspx?lg=bangla
http://www.nbr-bd.org/ index.html
http://www.nbrepayment.org/

Export-Import বিষয়ক তথ্য সহায়তা ও লাইসেন্স এর জন্যেঃ
http://www.epb.gov.bd/
http://www.ccie.gov.bd/
http://www.bsbk.gov.bd/
http://www.bdtariffcom.org/

চেম্বার অব কমার্স বিষয়ক তথ্যঃ
http://www.fbcci-bd.org/
http://www.dhakachamber.com/
http://www.mccibd.org/

বীমা সংক্রান্ত তথ্য সহায়তার জন্যেঃ
http://www.sbc.gov.bd/
http://www.jbc.gov.bd/
http://www.idra.org.bd/ idra-org/index.htm

কপিরাইট সংক্রান্ত সহায়তার জন্যেঃ
http://copyrightoffice.gov.bd/

ডিজাইন, পেটেন্ট ও ট্রেড মার্ক সংক্রান্ত সহায়তার জন্যেঃ
http://www.dpdt.gov.bd/

ফায়ার লাইসেন্স এর জন্যেঃ
http://www.fireservice.gov.bd/

পরিবেশ অধিদপ্তর এর লাইসেন্স এর জন্যেঃ
http://www.doe-bd.org/

বিএসটিআই রেজিষ্ট্রেশন ও লাইসেন্স এর জন্যেঃ
http://www.bsti.gov.bd/

হালাল ও অর্গানিক সার্টিফিকেট এর জন্যেঃ
http:// www.halalbangladesh.org/
http://bopma.org/
http://www.sgs.es/en.aspx

19
Smart Business Idea / Laundry Business Idea
« on: March 15, 2018, 05:19:54 PM »


ব্যস্ততা, লোকবলের অভাব ইত্যাদি নানা কারণে শহরবাসী নিজের ময়লা পোশাকটি লন্ড্রিতে দিয়ে আসতে পারেন না। এই সুযোগে আপনি প্রতিষ্ঠা করতে পারেন হোম ডেলিভারি লন্ড্রি সার্ভিস। বিস্তারিত জানাচ্ছেন মোস্তফা কামাল বিপ্লব

কাজটা খুব সহজ। আশপাশের বাসা-বাড়ি থেকে ময়লা কাপড় নিয়ে আসতে হবে। সেই কাপড় গ্রাহকের চাহিদা অনুসারে সাধারণ ওয়াশ, ড্রাই ওয়াশ, আয়রন ইত্যাদি করে যথাসময়ে গ্রাহকের বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসতে হবে। চাইলে যে কেউ নিজেকে এ পেশায় নিয়োজিত করতে পারেন। শিক্ষাগত যোগ্যতার বাধ্যবাধকতা নেই। লন্ড্রিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকলে ভালো, না থাকলে অভিজ্ঞ কর্মচারী প্রয়োজন হবে।

যা যা লাগবে
লন্ড্রি শপের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ লাইনসহ একটি দোকান। আবাসিক এলাকায় মূল রাস্তার পাশে কমপক্ষে ৩০০ বর্গ ফুটের একটি দোকান হলেই চলবে। ট্রেড লাইসেন্স, দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্র ইত্যাদি সংগ্রহে রাখতে হবে। দোকানের বেশির ভাগ অংশ কাপড় সংরক্ষণের তাক দিয়ে সাজাতে হবে। এর পাশাপাশি থাকবে আয়রন করার টেবিল। পুঁজি বেশি থাকলে ড্রাইওয়াশ করার সরঞ্জাম কিনে নিতে পারেন। নইলে ড্রাইওয়াশের অর্ডারগুলো অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে করিয়ে আনতে পারবেন।
ময়লা কাপড় ধোয়ার জন্য আলাদা জায়গা লাগবে। সেখানে কর্মচারী দিয়ে চুক্তিভিত্তিকভাবে কাপড় পরিষ্কার করাতে পারবেন। এ ধরনের কর্মচারীরা কাপড়ের প্রকারভেদে পারিশ্রমিক নিয়ে থাকেন। শার্ট, প্যান্ট, ব্লেজার, শাড়ি ইত্যাদি পোশাকের ওয়াশের জন্য সাধারণত ৫ থেকে ২০ টাকা পারিশ্রমিক দিতে হয়।

অর্ডার সংগ্রহ এবং ডেলিভারি দেওয়ার জন্য দুজন ডেলিভারিম্যান প্রয়োজন হবে। ডেলিভারিম্যান নিয়োগ দেওয়ার সময় তাদের কাছ থেকে জামানত নিতে ভুলবেন না। ডেলিভারিম্যানদের সাইকেল থাকলে কাজের গতি বাড়বে। ব্যবসা দাঁড়িয়ে গেলে কাভার্ড ভ্যানের সাহায্যে কাজ করলে সুবিধা হবে। ডেলিভারিম্যানদের মাসে আড়াই থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন দিতে হবে।
একটি হোম ডেলিভারি লন্ড্রি শপের জন্য প্রাথমিকভাবে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা প্রয়োজন হবে। দোকানের অ্যাডভান্স এবং ভাড়া, ডেকোরেশন, আয়রন এবং আয়রন করার টেবিল, কর্মচারীদের বেতন এবং দোকানের প্রচার বাবদ এই টাকা খরচ হবে। ড্রাইওয়াশ করার সরঞ্জাম কিনতে চাইলে আরো ৪০ হাজার টাকা লাগবে।

প্রচার
হোম ডেলিভারি লন্ড্রি সার্ভিস প্রতিষ্ঠার পর স্থানীয় গ্রাহকদের আপনার প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানাতে হবে। এ জন্য লিফলেট, ব্যানার কিংবা পোস্টার ব্যবহার করতে পারেন। প্রচারের সময় দোকানের মোবাইল নম্বর সংযুক্ত করতে হবে। এই নির্দিষ্ট নম্বরে গ্রাহক কাজের অর্ডার দেবেন এবং কাজ সম্পর্কে খোঁজখবর নেবেন। গ্রাহককে দেওয়া কমিটমেন্ট সব সময় পালন করতে হবে। যে তারিখে কাপড় পৌঁছে দেওয়ার কথা সে তারিখেই কাপড় পৌঁছাতে হবে। কমিটমেন্ট রক্ষা করতে পারলে অতিদ্রুত দোকানের কথা চারদিকে ছড়িয়ে যাবে।

আয়
লন্ড্রির দোকানে নির্ধারিত সেবা মূল্যের ২০ শতাংশ লাভ থাকে। মাসের আয় নির্ভর করে সেবার পরিধির ওপর। কাজ বেশি হলে আয় বাড়বে। নতুন অবস্থায় একটি লন্ড্রি দোকানে মাসে ৮ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা আয় হবে। কাজ বাড়লে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় হতে পারে।

ব্যান্ডবক্সের লন্ড্রি শপ
পুরনো কাপড় কিংবা কম্বল ধোয়ার জন্য যেতে হয় লন্ড্রিতে। এ ছাড়া রং ও রিপুর কাজ তো আছেই। নাগরিক জীবনে লন্ড্রি এখন অপরিহার্য। তবে এসব লন্ড্রির মধ্যে আছে কিছু বিখ্যাত চেইন শপ। তাদের মধ্যে ব্যান্ডবক্স অন্যতম। নিজ এলাকায় ডিলারশিপ নিয়ে আপনিও দিতে পারেন এমন একটি লন্ড্রি শপ। বিস্তারিত জানাচ্ছেন সিদ্ধার্থ সাই

সাভারের নরসিংহপুরে আছে ব্যান্ডবক্সের কেন্দ্রীয় ওয়াশ কারখানা। সারা দেশের সব আউটলেট থেকে কাপড় সংগৃহীত হয়ে সেখানে ওয়াশ হয়ে আবার আউটলেটে ফেরত যায়। সারা দেশে প্রায় ৪৪টির মতো আউটলেট আছে ব্যান্ডবক্সের। ঢাকায় ৩৮টি, নারায়ণগঞ্জে দুটি এবং চট্টগ্রাম ও সিলেটেও আউটলেট আছে।

কারা করতে পারবে
দোকানের জন্য মোটামুটি ৫০০ বর্গফুটের জায়গা হলেই হলো। এর সঙ্গে ট্রেড লাইসেন্স, দোকানের চুক্তিপত্রের কাগজপত্র, দোকানের প্রয়োজনীয় ডেকোরেশন তো লাগবেই। দোকানের স্থান অভিজাত এলাকায় হলে ভালো হয়। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ ডিলারশিপের দরখাস্ত করতে হবে ব্যান্ডবক্সের পরিচালক বরাবর। পরে কম্পানি থেকে লোক এসে আপনার দোকানের অবস্থান, ব্যবসায়ের সম্ভাব্যতা দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন।

আউটলেট চালানোর নিয়ম
দোকানের সৌন্দর্যবর্ধন, স্লিপ, কার্ড, দোকানের আনুষঙ্গিক সব কিছু আপনাকেই করে নিতে হবে। কম্পানির কাজ হবে ময়লা কাপড় নিয়ে যাওয়া এবং ধোয়া কাপড় পেঁৗছে দেওয়া। সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দোকান খোলা থাকবে। কর্মচারীর বেতনও আপনাকেই চালাতে হবে। গুলশান ও বনানীতে দিনে ২৫০ থেকে ৩০০ পিসের অর্ডার পাওয়া যায়; কিন্তু হাটখোলার মতো জায়গাগুলোতে ১৫০-এর বেশি কাপড়ের অর্ডার পাওয়া যায় না। সেভাবেই চিন্তা করে নিতে হবে।

ব্যান্ডবক্সে কাপড় ধোয়ার খরচ
সাধারণত ১৫ শতাংশ লাভ রেখে সার্ভিস চার্জ ঠিক করা হয়। শাড়ি ১১০ টাকা থেকে শুরু করে প্রকারভেদে ৪০০ টাকা পর্যন্ত। শার্ট ৫৫ টাকা, পাঞ্জাবি ৬০ থেকে ৭০, স্যুট ২২০, ব্লেজার ১৭০, দরজা-জানালার পর্দা ২৫০ থেকে ৩০০, কম্বল ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা নিয়ে থাকে। ঢাকার ভেতরে সাধারণত চার দিনে ধোয়া কাপড় ডেলিভারি দেওয়া হয়ে থাকে।

সূত্র: কালের কন্ঠ

20
Pricing / How to Calculate Pricing?
« on: March 15, 2018, 05:11:37 PM »
আমাদের দেশে হরহামেশাই দেখা যায় একই প্রোডাক্টের দাম একেক অনলাইন শপে একেকরকম। বেশিরভাগ অনলাইন ব্যাবসায়ী সব দিক চিন্তা না করে নিজের মনের মতো একটা দাম ঠিক করে থাকেন। অনুমান করে দাম ঠিক করার বড় অসুবিধা হলো সব রকম কস্ট ফ্যাক্টর প্রোডাক্টদের দামের মধ্যে যুক্ত হয় না, ফলে অনেকসময় এমন হতে পারে যে আপনার বিজনেস পরিচালনার খরচই  উঠে আসছে না। প্রোডাক্ট সোর্সিংয়ের খরচ এবং প্রোডাক্টের দাম নির্ধারণের ব্যাসিক কিছু কৌশল জেনে নিন এই আর্টিকেল থেকে।

প্রোডাক্টের কস্ট/খরচ কত?
প্রোডাক্টের দাম বা বিক্রয়মূল্য কতো হবে সেটার অনেকটাই নির্ভর করে প্রোডাক্টটির পেছনে আপনার কত খরচ হয়েছে সেটার উপর। তাই কোন প্রোডাক্ট বিক্রি করবেন সেটা ঠিক করার জন্য প্রোডাক্টটি তৈরী করতে বা সংগ্রহ করতে কেমন খরচ পড়বে সেটা পর্যালোচনা করে দেখা জরুরি। মূলত দুইভাবে প্রোডাক্ট সংগ্রহ করা যাবে:
নিজে তৈরী করা: আমাদের দেশে অনলাইন সেলারদের মধ্যে যারা ক্র্যাফট বা ঘর সাজানোর জিনিস নিয়ে কাজ করেন তারা নিজেরা প্রোডাক্ট উৎপাদন করে থাকেন। এখানে মূল খরচ হচ্ছে কাঁচামাল কেনা, শ্রমিকের পারিশ্রমিক ও  ডেলিভারি চার্জ।
 
হোলসেলার বা Supplier দের থেকে সংগ্রহ করা: আমাদের দেশে  হোলসেলারদের থেকেই বেশিরভাগ অনলাইন ব্যবসায়ী প্রোডাক্ট সোর্স করে থাকেন। এখানে মূল খরচ হচ্ছে প্রোডাক্টের দাম, প্রোডাক্ট নিজের ইনভেন্টরিতে মজুদের খরচ আর ডেলিভারি চার্জ।
 
প্রোডাক্টের পেছনে আপনার খরচের পাশাপাশি কিভাবে আপনি প্রোডাক্টটি সোর্স করছেন তার উপর অনলাইন বিজনেসের সফলতা অনেকখানি নির্ভর করে। যদি আপনার ট্যালেন্ট ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো থাকে তাহলে নিজে প্রোডাক্ট তৈরী করে অনলাইনে বিক্রি করলে আপনার কাস্টমার থেকে পণ্য এবং আপনি নিজে প্রশংসা পাবেন। নিজে প্রোডাক্ট উৎপাদন করলে কতগুলো বানাবেন, দাম কত রাখবেন, প্রোডাক্টের গুণগত মান কেমন হবে সেগুলো সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। টি-শার্ট, ঘর সাজানোর জিনিস, ছেলে/মেয়েদের ড্রেস এই ধরণের প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করতে চাইলে নিজে উৎপাদন করা সম্ভব। তবে নিজে উৎপাদন করলেও কিছু বিজনেস ফ্যাক্টর অবশ্যই মাথায় রাখা জরুরি:
 
আপনার কাঁচামাল কার থেকে সংগ্রহ করবেন এবং সেগুলো কিভাবে সংগ্রহ করবেন?
কাঁচামালের দাম কত পড়বে আর কাঁচামালের দামের উপর তৈরী করা প্রোডাক্টের দামের কতটা প্রভাব থাকবে?
প্রোডাক্ট তৈরী করতে কত সময় লাগে? মার্কেট চাহিদা অনুযায়ী আমি প্রোডাক্ট নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রোডাক্ট তৈরী করতে পারবো তো?
যদি কাস্টমার কাস্টম বানিয়ে দিতে বলে তাহলে ঠিকভাবে দিতে পারবো তো?

 
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর পজিটিভ হলে নিজে প্রোডাক্ট তৈরী করে বিক্রি করাটাই শ্রেয়। এখানে মূল সুবিধা হলো থার্ড পার্টির উপর আপনার প্রোডাক্ট সংগ্রহ করার জন্য আপনাকে নির্ভর করতে হচ্ছে না। উৎপাদন নিজে করলে প্রোডাক্ট কস্টিংও কম হবে ফলে প্রফিট বেশি হবার সম্ভাবনা বেশি। তবে আপনার রেসপনসিবিলিটি একটু বেড়ে যাবে যেহেতু প্রোডাক্ট উৎপাদন ও বিক্রি দুইটি আলাদা বিষয়, তখন দুইদিকেই সময় দিতে হবে সঠিকভাবে বিজনেস চালানোর জন্য।

অপরদিকে যদি নিজে প্রোডাক্ট উৎপাদন করাটা আপনার জন্য সুবিধাজনক না হয় তাহলে হোলসেলার থেকে প্রোডাক্ট কিনে বিক্রি করতে হবে। সেক্ষেত্রে দায়িত্ব কিছুটা কমবে কিন্তু প্রোডাক্টের দাম ঠিক করা এবং চাহিদা অনুযায়ী সাপ্লাই দেবার ব্যাপারে আপনার নিজের কন্ট্রোল কমে যাবে। আর কতগুলো প্রোডাক্ট কিনে রাখবেন সেই সিন্ধান্তটাও বাজারের চাহিদা বুঝে নিতে হবে। এক্ষেত্রে আপনার হোলসেলারের সাথে  সহজ ও সুন্দর সম্পর্ক স্থাপন করাটা গুরুত্বপূর্ণ। পণ্যের রিটার্ন পলিসি, ডিসকাউন্ট এই বিষয়গুলো নিয়ে আগে থেকে হোলসেলারের আলাপ করে নিতে হবে যাতে কোনোভাবেই আপনার কাস্টমারের উপর নেগেটিভ প্রভাব না পরে।

প্রোডাক্ট সোর্স করার পরে সব থেকে মজার কাজ হলো প্রোডাক্টের দাম ঠিক করা। প্রোডাক্টের সঠিক দাম আপনাকে মার্কেটে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে এবং প্রফিটেবল অনলাইন বিজনেস পরিচালনা করতে সহায়তা করবে।

কিভাবে প্রোডাক্টের বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ করবেন?
আমাদের দেশে হরহামেশাই দেখা যায় একই প্রোডাক্টের দাম একেক অনলাইন শপে একেকরকম। বেশিরভাগ অনলাইন ব্যাবসায়ী সব দিক চিন্তা না করে নিজের মনের মতো একটা দাম ঠিক করে থাকেন । অনুমান করে দাম ঠিক করার বড় অসুবিধা হলো সব রকম কস্ট ফ্যাক্টর প্রোডাক্টদের দামের মধ্যে যুক্ত হয় না, ফলে অনেকসময় এমন হতে পারে যে আপনার বিজনেস পরিচালনার খরচই  উঠে আসছে না। তাই প্রোডাক্টের দাম ঠিক করার আগে একটু ম্যাথ/অঙ্ক করে নিতে হবে।  নিচের চারটি ধাপ অনুসরণ করে খুব সহজেই লজিক্যালি প্রোডাক্টের দাম ঠিক করে ফেলা যাবে :

প্রথম ধাপঃ ওভারঅল প্রোডাক্টের খরচ নির্ধারণ করুন
প্রোডাক্ট বিক্রির আগে কিছু খাতা কলমের হিসাব করে নেওয়া দরকার। পণ্য উৎপাদনের খরচ, বিপণন খরচ, সেলস খরচ, পরিবহন খরচ, ডেলিভারি খরচ ইত্যাদি।

আসুন একটি ছোট অঙ্ক করে দেখি, কিভাবে একটি পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করবো। ধরুন আপনি চান ‘গেইম অফ থ্রোন্স’ সিরিজের একটি চরিত্র/ডায়লগ/হাউজ এর ডিজাইন নিয়ে বানানো হুডি বিক্রি করবেন। আনুমানিক ধরুন

— প্রত্যেকটি হুডির খরচঃ ১৮০-২২০ টাকা (নির্ভর করে কি পরিমাণ আপনি বানাবেন, মোটামুটি এই টাকার মধ্যে আপনি ভালো একটি হুডি পেয়ে যাবেন)
— প্রত্যেকটি হুডির বিক্রির পিছনে মার্কেটিং খরচঃ ১০০ টাকা
— প্রত্যেকটি হুডির বিক্রির পিছনে ইনভেন্টরি, লজিস্টিকস, ম্যানপাওয়ার খরচঃ ১০০  টাকা
— প্যাকেজিং খরচঃ ১০ টাকা
— ডিজাইন ও প্রিন্টিং খরচঃ ৫০ টাকা
সর্বমোট খরচ ঃ ২২০ + ১০০ + ১০০+ ১০ + ৫০ = ৪৮০ টাকা।

দ্বিতীয় ধাপঃ আপনার ব্যবসার কাঙ্ক্ষিত লাভের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করুন
এইবার এই পণ্য দিয়ে আপনি আসলে কত লাভ অর্জন করতে চান, সেই মানটি সেট করুন। কিছু ব্যাপার আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে। যেমন ধরুন, আপনি কত সংখ্যক হুডি বিক্রি করবেন? এটি কি আপনার এককালীন ব্যবসা? আপনার লাভের মার্জিন আপনি বাজারের চলতি প্রতিযোগিতাকে হার মানাতে কত কম দামে বিক্রি করতে পারবেন? আপনার আসল লক্ষ্য কি, বেশি পরিমাণে বিক্রি করে লাভ তুলে আনা নাকি অল্প সংখ্যক বিক্রি করেই বেশি দাম রেখে লাভের অঙ্কটি তুলে আনবেন।

ধরুন, আপনি ঠিক করলেন আপনি লাভ করতে চান প্রতি হুডিতে ৩০% (কম পরিমানে বিক্রির চিন্তা মাথায় থাকলে নির্দিষ্ট পরিমান লাভ রাখার চিন্তাও করতে পারেন)।

তাহলে আপনার প্রত্যেকটি হুডির দাম দাঁড়াবে , ৪৮০ + ১৪৪ টাকা = ~৬৫০ টাকা, যা কিনা বাজারের চলতি দাম হিসেবে যথেষ্টই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। আপনি চাইলে আপনার লাভের মার্জিন অনুসারে হুডির দাম এদিক ওদিক করতে পারেন হাল্কা পাতলা। এর মধ্যে খেয়াল করে দেখুন চাইলে আপনার ডেলিভারি কস্ট ও অ্যাড করা আছে। চাইলে আপনি ফ্রি ডেলিভারিও অফার করতে পারেন। অথবা আরেকটু দাম বাড়িয়ে ফ্রি ডেলিভারি সুবিধা দিতে পারেন। এগুলো পুরোই আপনার পরিকল্পনার অংশ। আর লাভের অঙ্ক যদি বেশি রাখতে চান তবে কোন কোন জায়গায় খরচ কমাতে পারেন সেগুলো নিয়ে আরেকটু ব্রেইনস্টর্মিং করে রাখতে পারেন।

নিচের বিষয় গুলো অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে যখন আপনি পণ্যের দাম নির্ধারণ করবেনঃ

আপনার পণ্যের ভ্যালু এডিশনঃ ক্রেতা যখন পণ্য কিনে তখন সে শুধু পণ্যটাঈ কিনে না, সাথে যেন এক জীবন্ত অভিজ্ঞতা কিনে। ক্রেতাকে বিশেষভাবে গণ্য মনে করানো বিক্রেতা হিসেবে আপনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ। বিশেষ আকর্ষণীয় কোন প্যাকেজিং, ফ্রি রিটার্ন সুবিধা এই ধরনের সুবিধা যোগ করে দিন পণ্যের সাথে। যদি আপনি এমন কিছু অফার করছেন যা আপনার প্রতিদ্বন্দ্বীরা করছে না নির্ভয়ে তার জন্যে ও আপনি চার্জ করতে পারেন।
ওভারপ্রাইসিংঃ   ওভারপ্রাইসিং আপনার পণ্যের বিশ্বাস হারাবে। সাথে সেলস তো কমবেই। লোভের গুড় না যাতে পিঁপড়া খেয়ে ফেলে সেদিকে নজর দিতে হবে।
আন্ডারপ্রাইসিংঃ পণ্যের কম দাম আবার আপনার পণ্যের মান নিয়ে ক্রেতার মনে প্রশ্ন জাগাবে। এতে ব্র্যান্ডিং এর ও এক ধরনের ক্ষতি হতে পারে সময়ে অসময়ে।
 
অনলাইনে যেই প্রোডাক্টের ব্যবসাই করেন না কেন আপনার সোর্সিং যদি মজবুত না হয় এবং সঠিক কম্পিটিটিভ দামে যদি পণ্য বিক্রয় করতে না পারেন তাহলে লাভের মুখ দেখা কষ্টকর হয়ে যাবে। তাই ই-কমার্স ব্যবসার এই দুই দিকে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করুন।

21
Quote
Writer: জাহাঙ্গীর আলম শোভন



গত ২০১৭ সালের শেষের দিকে আমি নিজ উদ্যোগে বিভিন্ন ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দিয়েছিলাম। যার সারমর্ম ছিলো বিনিয়োগ পরিস্থিতি অনুধাবন করা। মোট ১২ টি প্রশ্ন দিয়ে আমি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ সক্ষমতা ও তাদের চাহিদা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেছিলাম। এরমধ্যে ১০৬ জন গুগল ফর্মে জবাব দিয়েছেন। এর মধ্যে আবার ৭ জন আছেন যারা ২ বার আবেদন করেছেন। ফলে সংখ্যা দাড়ালো ৯৯ জন। এই ৯৯ জন তরুন উদ্যোক্তার জবাবের আলোকে আমি পুরো চিত্রটা তুলে ধরছি। কারণ আমি বলেছিলাম এই চিত্রটা আমি প্রকাশ করবো।

এর মধ্যে ৬৩ জন আবেদন করেছেন ঢাকা থেকে, এখানে আমি নারায়নগঞ্জ ও গাজীপুরকে ঢাকার মধ্যে গণনা করেছি। বাকী ৪৬ জন ঢাকার বাইরে থেকে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, পাবনা, ফেনী, সিরাজগঞ্জ প্রভৃতি জেলার লোক রয়েছেন। অন্যান্য জেলার মধ্যে ছিলো-যশোর কুস্টিয়া, নরসিংদী,রংপুর, শেরপুর, কিশোরগঞ্জ, নোয়াখালী ও চুয়াডাঙ্গা, এর মানে হচ্ছে বেশীরভাগ প্রায় ৬৫ থেকে ৭০ ভাগ উদ্যোগ আমরা ঢাকা কেন্দ্রীক চিন্তা করছি। ঢাকায় আরো ভীড় বাড়ার একটা সম্ভাবনা এখানে রয়েছে। আগামী দিনগুলোতে ঢাকাতেই সব সুবিধা পুঞ্জিভূত করে ঢাকার ভালো হচ্ছে নাকি খারাপ হচ্ছে, সেটা সময় বলে দেবে।

শতকরা ৯৫ জন নিজের ব্যবসার জন্য পুরণ করেছেন। কয়েকজন ম্যানেজিং পার্টনারও রয়েছেন। এই তথ্য থেকে এটা বুঝেছি যে বেশীরভাগ ছোট উদ্যোগগুলো একক ও একব্যক্তি কেন্দ্রীক। ফলে চিন্তাও এক মাথা এবং প্রোডাক্টস, আইডিয়া কিংবা ফান্ড সোর্সিং এর নেটওয়ার্কও একটাই। যদি ৫/১০ জনের উদ্যোগে হতো তাহলে সম্ভাবনাও ৫ গুন বেশী হতো। যদিও আমাদের দেশে আমাদের সঠিক সিদ্ধান্তের অভাবে এবং ছোট বড় ভুলের কারণে অনেকে পার্টনারশীপ ব্যবসায় করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে।

ব্যবসার ধরণ সম্পর্কে জবাব দিতে গিয়ে ৩৬ জন তাদের ব্যবসায় অনলাইন, আইটি বা ই-কমার্স বলে উল্লেখ করেছেন বাকীগুলোর বেশীরভাগ পণ্যভিত্তিক এর মধ্যে বেশীভাগই ছিলো ফ্যাশনওয়ার। এছাড়া আমদানী, রফতানী, ফুড, কাঠপণ্য, খুচরা পণ্য, হেলথ, ইনটেরিয়র, কৃষি, লুব্রিকেন্ট, প্রোল্ট্রি, পরিবহন, হ্যান্ডিক্রাফটস, মেশিনারী, সাপ্লাই, কমুউনিটি ব্যাংকিং, গার্মেন্টস, হোটেল বুকিং, তাঁত পন্য, আইএসপি ইত্যাদি রয়েছে। পণ্যের মধ্যে ছিলো কৃষি পণ্য, বই, গরুর খাদ্য, ইলেকৈট্রিক পণ্য, বাই সাইকেল, ঔষধ, প্রিন্টিং পন্য, কম্পিউটার এক্সেসরিজ, পাথর, সুয়েটার, তেল ও মসলা, সোলার পন্য, অর্গানিক খাবার, গ্যাজেট, বেডশীট, টি শার্ট, এলইডি লাইট, বাঁশের তৈরী পন্য, কসমেটিকস ইত্যাদি।

কি ধরনের আর্থিক সহযোগীতা প্রয়োজন, এই প্রশ্নের জবাবে ৫৫ ভাগ বলেছেন কিস্তিতে পরিশোধ করা যায় এমন লোন, ১০ ভাগ রেসপন্ডার বলেছেন এককালীন পরিশোধের কথা আর ১৭ ভাগ লোক ব্যাংক লোক চেয়েছেন। মানে হলো ব্যাংক লোন নিয়ে যতই ভয়ভীতি থাকুক। অনেকে ব্যাংক লোন চায়। তবে মনে হলো ভেনঞ্চার ক্যাপিটাল বা ভেনঞ্চার পার্টনার সম্পর্কে সাড়াদানকারীদের ধারণা বেশী নেই।

কোন শর্তে বিনিয়োগ করতে চান? এই প্রশ্নের জবাবে লোন হিসেবে নিতে চেয়েছেন শতকরা ৫২ জন, লভ্যাংশ শেয়ারের ভিত্তিতে বিনিয়োগ নিতে চেয়েছেন ২৭ জন, বিনিয়োগ কারীর সাথে মালিকানাও শেয়ার করতে চেয়েছেন ১৪ জন। এর মানে হলো বেশীরভাগ মানুষ তার স্বপ্নকে কারো সাথে ভাগ করতে চাননাতবে ১৪শতাংশ উদ্যোক্তা মালিকানা শেয়ার করতেও রাজি। মনে হচ্ছে তারা হয়তো বুদ্ধিমান নয়তো বা একটু সরল আছেন।

বিনিয়োগ কারীর কাছ থেকে কমবেশী ৫০ ভাগ বিনিয়োগ চান ২৮ শতাংশ উত্তরদাতা, ২০ থেকে ৪০ ভাগ বিনিয়োগ চান ২৫ শতাংশ উদ্যোক্তা, ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ বিনিয়োগ চান ২০ শতাংশ উদ্যোক্তা। এতে করে বোঝা গেল বেশীরভাগ উদ্যোক্তারই নিজের কিছু প্রস্তুতি রয়েছে। বাকীটুকু তারা কারো কাছ থেকে সহযোগিতা চান। তবে শতকরা ১০ জন পুরো বিনিয়োগটাই কারো কাছ থেকে প্রত্যাশা করেন।

আমরা জানি যে, বিনিয়োগ পাওয়ার জন্য আমাকে বিনিয়োগকারীকে বোঝাতে হবে এবং সেটা সঠিকভাবে প্রেজেন্ট করতে জানতে হবে? এ ব্যাপারে কি ফলাফল বেরিয়েছে দেখুন।

বিনিয়োগ এর পরিকল্পনা প্রোফাইল তৈরী প্রসঙ্গে

১. বিনিয়োগ পেলে সেটা আমি কিভাবে কাজেলাগাবো পুরো প্লান প্রোফাইল তৈরী করা আছে…: ২৬%

২. পুরো বিষয়টি আমার মাথায় আছে। প্রয়োজনেডকুমেন্ট আকারে পেশ করতে পারবো।…: ৪৩%

৩. কিভাবে টাকা খরচ করবো বুঝিয়ে বলতেপারবো কিন্ত এতকিছু লিখে দিতে পারবনা।…: ২০%

৪. কোনো কনসালটেন্সি ফার্মের সাহায্য নিয়েপ্রাপ্ত টাকা কোন খাতে কিভাবে খরচ করবো… ৩%

৫. আসলে এ ধরনের প্লান কিভাবে লিখতে হয়জানি না। যদি কোনো ওয়ার্কশপের মাধ্যমে শিখিয়ে দিলে ভালো হয়.. ৮%

মজার ব্যাপার হলো প্রতি ৩ জন লোকের মাত্র একজন বিনিয়োগ পাওয়ার জন্য তৈরী হয়ে আছেন বাকীরা সময় হলে দেখা যাবে এই মত নিয়ে বসে আছেন। তাহলে দেখুন টাকা কেন আপনার কাছে আসবে। আপনি একটা পন্য বিক্রয় করতে গেলে ২০ জনকে বলার পর সুন্দর ভাবে দেখানো ও বোঝানোর পর একজন কিনে আর আপনি বিনিয়োগ পাওয়ার জন্য কোনো প্রস্তুতিই নিচ্ছেন না। এখানেও আমরা যদি একই হিসেব করি। যে, ২০ জন বিনিয়োগকারীকে প্লান এবং প্রেজেন্টশান দেখালে একজন হয়তো রাজি হবে। তাহলেও আমাদের জন্য ভালো হয়। কারণ আমার ক্রেতা প্রতিমাসে ১০০০ জন দরকার হতে পারে কিন্তু বিনিয়োগকারী দরকার মাত্র একজন।

আবেদনকারীদের মধ্যে ১১ জনের বীমা ও সঞ্চয়পত্র আছে, ১৪ জনের নিজের নামে জমি বা প্লট আছে, ৫০ জনের নিজের কিছু নগদ টাকা আছে, ৮১ জন ইতোমধ্যে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছেন, এরমধ্যে ৬৮ জন ব্যাংকে বিজনেস একানউন্ট করেছেন। ২ থেকে ৫ লাখ টাকার পে-অডার বা জামানত দিতে পারবেন ৬ জন। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো সর্বশেষ প্রশ্নের জবাবে সবাই একই উত্তর দিয়েছেন। প্রশ্নটি ছিলো-

আপনার দেয়া এই ফরমের তথ্য সমূহ কোনো বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে দিতে পারি? যাতে তারা আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারে। উত্তর: হাঁ ১০০%। সকলকে ধন্যবাদ।


source: http://blog.e-cab.net

22
Successful Story / Rising Digital Marketing Agency of Bangladesh
« on: March 11, 2018, 09:45:27 PM »

ডিজিটাল মার্কেটিং-এ খুব দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ইন্টারনেট সহজলভ্য হয়ে যাওয়ার পর ডিজিটাল মার্কেটিং এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি এগিয়ে যাচ্ছে। এদের মধ্য থেকে এসডি এশিয়া তুলে ধরেছে বাংলাদেশের উদীয়মান সেরা ৬ ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সিকে।

Analyzen

Analyzen বাংলাদেশের সর্বপ্রথম ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি। শুরুতে ওয়েব এবং মোবাইল এপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজ করতে থাকা Analyzen এখন আরও অনেক দিকেই নিজেদেরকে বিস্তৃত করেছে। স্যামসং মোবাইল, ইউনিলিভার, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, ডেল, নেসলে, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, প্রাণ, বার্জার পেইন্টস, ক্যাটস আই, বাংলালিংক, রেডিও ফুর্তিও সহ আরও অনেক ক্লায়েন্টের সাথে কাজ করছে তারা।

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, সফটওয়ার ডেভেলপমেন্ট, ফেসবুক ও মোবাইল এপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট, গেম ডেভেলপমেন্ট, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এবং ডিজিটাল স্ট্রেটিজি মেকিং এর সেবা প্রদান করে আসছে তারা।

তাদের মার্কেটিং ক্যাম্পেইন ব্যাবহার করে স্যামসাং মোবাইল ফোন ওয়ার্ল্ড ব্র্যান্ড কংগ্রেস ২০১৪’র সেরা ব্র্যান্ড হিসেবে পুরস্কার পেয়েছে।অনলাইনে জনপ্রিয়তা পাওয়া রেক্সপোসড সিরিজ বানিয়েছিল এই Analyzenই।

ইমেইল: sayeef@analyzenbd.com
মোবাইল: +8801817576906

Magnito Digital

পুরোদমে ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কাজ করছে Magnito Digital। মান সম্মত কাজের মাধ্যমে খুব দ্রুত বাংলালিংক, গ্রামীনফোন,ইউনিলিভার, মেরিকো, আমেরিকান এক্সপ্রেসসহ বড় বড় ৩০টি কোম্পানিকে ক্লায়েন্ট হিসেবে পেয়েছে তারা।বাংলালিংক ফুটবল ফিয়েস্তার মত সফল আয়োজন সম্পন্ন করেছে তারা। বিভিন্ন ধরণের এনিমেশন, মোবাইল ও ফেসবুক এপ্লিকেশন তৈরি করে যাচ্ছে তারা।

ম্যাগনিটোর এক্টিভেটিং উইং ম্যাগনিটো মোশন অফলাইন এক্টিভেটিসের সাথে সামঞ্জস্য রেখে অনলাইন এক্টিভিটির কাজও করছে। ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০১৪ নিয়েও কাজ করেছে তারা। এখনই ডট কমের হয়ে হেলিকপ্টার রাইড কন্টেস্টেরও আয়োজনও তাদের বানানো।

২০১৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে ম্যাগনিটো রাডার নামে বাংলাদেশের প্রথম সোশ্যাল মিডিয়া ড্যাশ-বোর্ড চালু করে।এই ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্র্যান্ড এবং এজেন্সিগুলো তাদের সোশ্যাল মিডিয়া ক্যাম্পেইনের পরিসংখ্যান ট্র্যাক ও সেটা নিয়ে নিজেদের প্ল্যানও সাজাতে পারে তারা।দেশের বাইরেও এই ড্যাশ-বোর্ডকে জনপ্রিয় করার জন্য এখন কাজ করে যাচ্ছে ম্যাগনিটো।

যোগাযোগ- আমির খান, ডিরেক্টর
ফোন 01711699858
ইমেইল: amer@magnitodigital.com

 

Strategeek Digital

Maverick Studios হিসেবে পরিচিত ছিল Strategeek Digital।ডিজিটাল স্ট্রেটিজি- কনসালটেন্সিসহ ডিজিটাল মার্কেটিং এর সব বিভিন্ন সেবা দিয়ে আসছে তারা। Strategeek Digital রবি স্টোর লোকেটরের মত বিভিন্ন মোবাইল এপ্লিকেশনও তৈরি করে থাকে।

নেসলে বাংলাদেশ এবং রবি আজিয়াটা লিমিটেডকে দেয়া সেবার স্বীকৃতি হিসেবে ডিজিটাল সার্ভিস কন্ট্রাক্টের পুরস্কার পেয়েছে। তাদের সফল সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংএর মাধ্যমে রবি ১ মিলিয়নের বেশী ফেসবুক ফ্যান পেয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফ্ল্যাগ সোশ্যাল মিডিয়া ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ১.১ মিলিয়ন মানুষের কাছে পরিচিতি পেয়েছিল রবি।

তাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যানিং এর মাধ্যমেই রবি ফেসবুকের সবচেয়ে বিশ্বস্ত ব্র্যান্ড হিসেবে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে।এছাড়া রবি কমিউনিটি চেইনের জন্য কমওয়ার্ড সিলভার পুরস্কারও জিতে নেয় তারা।

যোগাযোগ: সিদরাত তালুকদার
ফোন:  01814 663 207.
ইমেইল: sidrat@maverickbd.com

WebAble

WebAble একটি ডিজিটাল ক্রিয়েটিভ এজেন্সি। ওয়েব ভিত্তিক সহায়তার মাধ্যমে বিজনেসকে এগিয়ে নিয়ে যেতেই কাজ করে থাকে তারা। প্রতিষ্ঠানটি ওয়েব ডিজাইন,সোশ্যাল মিডিয়া, কন্টেন্ট মার্কেটিং এবং এড ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস প্রদান করে আসছে।

টেক মার্কেটের বিভিন্ন কোম্পানি কাছ থেকে বিশ্বস্ততা অর্জন করেছে WebAble। অনলাইন প্রেজেন্স এবং ROI এর মাধ্যমে ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ও সোশ্যাল মিডিয়া ট্রেন্ড বুঝে ক্লায়েন্টদেরকে সেবা প্রদান করে আসছে।

সারা বিশ্বে মাল্টি চ্যানেল অনলাইন মার্কেটিং এর মাধ্যমে মাত্র দুই মাসের মধ্যে সুবিধা-বঞ্চিত শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষার জন্য জাগো ফাউন্ডেশনের জন্য ২৩৫টি স্পন্সর জোগাড় করে দিয়েছে WebAble।তারা সোশ্যাল মিডিয়া এক্টিভেশনের মাধ্যমে মহাখালীতে অবস্থিত সি এম পেট্রোলের ২০% অকটেন বিক্রি বাড়িয়ে দিয়েছে। ডাটা ও ইঞ্জিনিয়ারিয়ারিং এর অনন্য সমন্বয়ের মাধ্যমে নিজেদের কাজ গুলো করে থাকে প্রতিষ্ঠানটি।

যোগাযোগ : অভিক আলম (সহ প্রতিষ্ঠাতা) 01794777103
ইমেইল: ovick@webable.com.bd
টুইটার: @OvickAlam

কুকি জার

বিজনেসের ক্ষেত্রে ডিজিটাল মার্কেটিংকে যারা কোর সোর্স হিসেবে ব্যাবহার করতে চায় তাদেরকে লক্ষ্য করেই কাজ করে যাচ্ছে কুকি জার। জিএসকে, পেপসিকো, এখানেই ডটকম, চালডাল ডট কম এবং এয়ারটেলের মত কোম্পানিকে বিভিন্ন ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। বড় বড় কোম্পানির মত নতুন শুরু হওয়া কোম্পানিদেরকেও সার্ভিস দিচ্ছে তারা।

কন্টেন্ট ক্রিয়েশন ম্যানেজমেন্ট, রিলেশনশিপ ম্যানেজমেন্ট, এড ক্যাম্পেইন ম্যানেজমেন্টের মত বিভিন্ন ধরণের সেবা দিয়ে থাকে তারা।সব সময় নতুন নতুন আইডিয়ার মাধ্যমে ক্লায়েন্টদের সেবা নিশ্চিত করে আসছে তারা।

যোগাযোগ: কায়সার ভুঁইয়া
ফোন: 01713415705
ইমেইল: kaisar@cookiejarbd.com

Unifox Digital

বাংলাদেশের সর্বপ্রথম গুগল এডসেন্সের সাথে মিলে কাজ করেছে Unifox Digital। বিশ্বমানের আইটি প্রোফেশনালসদের সাথে নিয়ে অস্ট্রেলিয়া-সিঙ্গাপুরের মত বিভিন্ন দেশের সঙ্গে অনলাইন মার্কেটিং করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। ডিজিটাল স্ট্রেটিজি, টার্গেট এড, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, মোবাইল ও এপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজিং সার্ভিসের মাধ্যমে স্থানীয় বিজ্ঞাপন দাতাদের সাহায্য করে যাচ্ছেন তারা। ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে রিসার্চ করে সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজিং সার্ভিস চালিয়ে আসছে Unifox Digital । টেলিকম,খাবার, দুগ্ধজাত পণ্য, অটোমোটিভ পণ্য এবং গ্যাজেটসহ বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রির ক্লায়েন্টের সাথে কাজ করছে ।

গত বছর জানুয়ারিতে শুরু হওয়া নতুন এই কোম্পানিটি এখন অনেকগুলো প্রোজেক্ট নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। ওপেন ই-কমার্স সুবিধার মাধ্যমে ই-কমার্স সংক্রান্ত বিজনেস বান্ধব পরিবেশ তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে তারা।

প্রতিষ্ঠানটির সিইও সৌরভ ইসলাম ই-কমার্স নিয়ে বেশ আশাবাদী।কনসিউমারদের নিজেদেরও যে কিছু অধিকার আছে সেটাকে আবার চাঙ্গা করে তুলতে চান তিনি। তাদের অন্যতম সেরা কাজ ছিল জাগো ও আরলা ফুডসের সাথে অনলাইন কার্যক্রমের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশের শিশুদের জন্য পুষ্টিকর খাবার সরবরাহের কাজ করে আসছে। প্রতি মাসে আরলা ১৪০০ শিশুর জন্য দুধের ব্যবস্থা করে থাকে।

যোগাযোগ:  সৌরভ ইসলাম (প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও)
ফোন: 01711268177
ইমেইল: unifoxdigital@gmail.com

Source: http://bangla.sdasia.co/

23
Failure Story / 21 Reasons Why Startup Fail
« on: March 11, 2018, 09:37:01 PM »

স্টার্টআপ ব্যবসা সারা বিশ্বে গত কয়েক বছর ধরে আলোচিত শব্দ নতুন ব্যবসা ও উদ্যোগে।  কিন্তু স্টার্টআপ এর সফলতার পাশাপাশিও রয়েছে ব্যর্থতা । আর ব্যর্থতা মানে বুঝেন ? আপনার স্বপ্নের একটি মৃত্যু । যে স্বপ্নটি আপনি অনেকদিন ধরে নিজের মাঝে বেড়ে তুলেছেন কিন্তু তার সঠিক বাস্তবায়ন আপনি করতে পারেননি । কেন এমন হলো ?

(এ লেখাটি  Contentever ফেসবুক গ্রুপে আলোচনা করা  হয়েছে । )

আমরা অনেকে বলি সময়টা ভালো যায়নি তাই কোম্পানি ঠিক মত ব্যবসা করতে পারেনি । বিষয়টা হয়ত তাই ! কিন্তু অন্যরকম আরেকটি বিশ্লেষণও আছে এর পাশাপাশি । সেটা কি ? সেই অন্যরকম বিশ্লেষণে অনেকগুলো অংশ চলে আসে আলোচনা করতে গেলে ।

২০০৮ সালের সফল স্টার্টআপ ‘Airbnb’ এখনো আলোচনার তুঙ্গে । অথচ এর প্রতিষ্ঠারা যখন খুব ব্যর্থ ব্যক্তিজীবনে ঠিক তখনই তাদের এই সফল স্টার্টআপ এর গল্প শুরু হয়। ২০০৭ সালের কথা, যখন এর সহ প্রতিষ্ঠাতা Brian Chesky এবং Joe Gebbia নিউইয়র্ক থেকে সানফ্রানসিসকো’তে আসেন । খুব হতাশ তারা তখন , তাদের জব নেই এবং তাদের কিছু আয়-রোজগার দরকার নতুন জায়গায়  ভালোভাবে থাকার জন্যে। সেই সময়ে শহরের সকল হোটেলগুলো একটা কনফারেন্স এর জন্যে সব বুকিং এবং তাদের জীবনে নতুন স্টার্টআপ এর সুযোগ সেভাবেই আসলো । কিছু Air Bed তারা কিনলো এবং সকালের নাস্তার সুযোগ-সুবিধা দিয়ে তারা শুরু করলো তাদের নতুন উদ্যোগ ‘Airbnb’  । প্রতি রাতে ৮০ ডলারের বিনিময়ে অতিথিদের থাকার সুযোগ করে দিয়ে শুরু তাদের এই আলোচিত স্টার্টআপ।

একটা স্টার্টআপ ব্যবসা এর শুরুতে আসলে কত সময় প্রয়োজন সেটা বুঝা মুশকিল । কখন আসলে শুরু করবেন এবং কখন করবেননা সেটাও আপনার ওপর নির্ভর করছে।

গত কয়েক বছরে দেশ – বিদেশের ২১ টি ব্যর্থ স্টার্টআপ এর বিষয়ে জানতে গিয়ে যে বিষয়গুলো বারবার মনে এসেছে তা হচ্ছে , কেনো একসময়ের সফল ‘স্টার্টআপ’ ইয়াহু বিশ্বের প্রভাবশালী তথ্যপ্রযুক্তির প্রতিষ্ঠান হয়েও একসময় ব্যর্থ হয়ে পরে । কি ছিল কারণ ? যেখানে সার্চ ইঞ্জিন ‘গুগল’ পারলো তাদের সাথে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে এবং ‘ইয়াহু’ শুধুই এখন অতীত । সময়োচিত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি একসময়ের জায়ান্ট ‘ইয়াহু’ । তাই সবার শীর্ষে থেকেও আজ ব্যর্থ প্রতিষ্ঠানের কাতারে এসেছে । তাই সফল স্টার্টআপ হলেই কোন প্রতিষ্ঠানের চিন্তা কমে যাবে এবং সময়োচিত সিদ্ধান্ত নিবেন না তাহলেই খুব বেশি ভুল করবেন।

‘গুগল’ কেনো এখন সফল ? গুগল এর বেশকিছু সফল সেবা এখন অনেক আলোচিত । আপনি কি ভাবতে পারবেন ‘গুগল’ এর সেই সেবাগুলো ছাড়া আপনার জীবনের একদিন ? জিমেইল,এডসেন্স,এডওয়ার্ড,গুগল ড্রাইভ এর কথা না বললেই হয়না । আর ‘গুগল’ এর সার্চ ইঞ্জিন , সেটাতো এক বিস্ময় সার্ভিস গুগলের । আরও আছে ইউটিউব ভিডিও শেয়ারিং এর সাইট।  গুগলের এত এত সফল কার্যক্রম কিন্তু ‘গুগল প্লাস’ কিন্তু সফল হয়নি এখনো। এর কারণটা আপনাদের ওপরই ছেড়ে দিলাম । কেনো এটা এত আলোচিত হয়েও গুগলের অন্য সার্ভিসগুলোর মতন হয়ে উঠতে পারেনি।

কেনো অনেক স্টার্টআপ ব্যবসা ব্যর্থ হয় ?

স্টার্টআপ ব্যবসা ব্যর্থ হওয়ার ২১ টি কারণ
১। স্টার্টআপ ব্যবসা ক্রেতা বা সেবা গ্রহণকারী কারা
ব্যবসা আপনি আসলে কাদের জন্যে করবেন ? সেবাটি কাদের জন্যে তা কি ভালোভাবে বের করতে পেরেছেন ? আপনার ক্রেতা বা সেবা গ্রহণকারী আসলে কারা হবে ? এই বিষয়গুলোতে সঠিক ধারণা না থাকা।

২। প্রোডাক্ট এর ব্যবস্থা কিভাবে করবেন
বাজারে এই ব্যবসা করলে খুব ভালো হবে ভাবছেন ? আপনার বন্ধু আপনাকে এই প্রোডাক্ট সাপ্লাই দিতে পারবে । আপনার আরেক আত্বীয় আপনাকে কম দামে আরেকটি প্রোডাক্ট দিবে । তাহলে অন্য প্রতিযোগীদের থেকেও আপনি কম দামে প্রোডাক্ট আপনার কাস্টমাদের কাছে বিক্রি করতে পারবেন এবং অনেক লাভ করতে পারবেন। যদি আপনার মাঝে এই চিন্তাগুলো থাকে । তাহলে থামেন ! পৃথিবীর ব্যর্থ স্টার্টআপগুলোর অন্যতম কারণ এগুলোই । আপনি মানতে চান আর না চান । অল্পকিছু সফলতার গল্প দিয়ে বাস্তবতা মেনে নেয়া ঠিক না ।

৩। নিজের আয়ত্বের মাঝে কি আপনার উদ্যোগ
আপনার নিজের আয়ত্তের মাঝে যা নেই সেই বিষয় নিয়ে স্টার্টআপ শুরু করার কোন প্রয়োজন নেই । এতে আপনার পরিশ্রম এবং সময়ের খরচ।

৪।  সঠিক সময়ে স্টার্টআপ শুরু করতে না পারা
সঠিক সময়ে স্টার্টআপ শুরু করতে না পারা আরেকটি কারণ । এখন কি ট্রেন্ড চলছে সেটা যদি আপনি বুঝতে না পারেন তাহলে সেই প্রতিষ্ঠান সামনে এগিয়ে যেতে পারবেনা ।

৫। স্টার্টআপে ভিন্নতা নেই
একজন এইরকম স্টার্টআপ শুরু করেছে এবং আপনিও আরম্ভ করে দিলেন কোন কিছু না জেনে । তাহলে ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি বেড়ে যাবে। মার্কেট রিসার্চ বলে একটা কথা সারা বিশ্বে প্রচলিত আছে। কেনো সেটা জানেন ? কারণ স্টার্টআপ এর কত সম্ভাবনা তা যাচাই করা। আপনি যদি মার্কেট রিসার্চ না করে কোন কিছু শুরু করে দেন তাহলে সেটা নিয়ে আপনাকে সমস্যায় পরতে হবে।

৬। রিসার্চ এবং ডেভেলপমেন্টে সমস্যা
কেনো রিসার্চ এবং ডেভেলপমেন্টের পিছনে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার জায়ান্ট কোম্পানি খরচ করে । সেটা ভেবে দেখেছেন ? ‘টাইটানিক’ চলচ্চিত্রের কথা সবাই জানেন । এর পিছনে যত খরচ করেছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান তার থেকে আরও বেশি কিভাবে আয় করলো ? শুধু কি গল্পটা ভালো ছিল ? না ! পুরো প্রি- প্রোডাকশন, পোস্ট প্রোডাকশন এবং সামগ্রিক উপস্থাপন ভালো ছিল আর ভালো একটা টিম। আর তাই  বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করেছে। হলিউডের ‘ইনসেপশন’ চলচ্চিত্রের কথা মনে আছে ? ? এই চলচ্চিত্র কত বিখ্যাত হয়েছে । কিন্তু এর পিছনের গল্প জানেন ? আট বছর ধরে চলচ্চিত্রটির পরিচালক ‘ক্রিস্টেফার নোলান’ এর গল্প নিয়ে কাজ করেন এবং ২০১০ সালে এই চলচ্চিত্র মুক্তি পায় । সেইজন্যে আপনাকেও অনেক টাকা খরচ করতে হবে তা নয় । কিন্তু আপনাকে রিসার্চ এবং ডেভেলপমেন্ট নিয়ে অবশ্যই চিন্তা করতে হবে । কারণ রিসার্চ এবং ডেভেলপমেন্টের ওপর আপনার কোম্পানির ভালো অবস্থা নির্ভর করবে।

৭। ব্যবসায়িক পার্টনার নির্বাচনে সমস্যা
উপযুক্ত ব্যবসায়িক পার্টনার না পাওয়া বাংলাদেশের স্টার্টআপগুলোর ব্যর্থ হওয়ার আরেকটি কারণ । আপনার পার্টনার যদি শুধু টাকা দিয়েই নিজের দায়িত্ব শেষ করেন কিংবা আপনার ওপর সবকিছু নির্ভর করে তাহলে ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে অবশ্যই এই বিষয় চিন্তার কারণ । আপনাকে এই বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। দক্ষ পার্টনার খুঁজে বের করুন । আর তা না হলে নিজেই একা ব্যবসা করুন ।

৮। প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে দক্ষ লোক কোম্পানিতে না রাখা
অনলাইন ব্যবসায়ের ব্যাপারে প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে দক্ষ লোক কোম্পানিতে না রাখা স্টার্টআপগুলোর ব্যর্থ হওয়ার আরেকটি কারণ। একটি সাইট ডেভেলপ করলেই সব হয়ে যায়না । ডাটা সিকুয়েরিটি , সাইটের নিরাপত্তা এবং সাইটের ক্রমাগত উন্নতি প্রতিনিয়ত খেয়াল করা হয়না। এ কারণে কোন স্টার্টআপ ভালো সম্ভাবনা তৈরি করার পরেও ব্যর্থ হচ্ছে।

৯। সঠিক টিম তৈরি করতে পারেনা
বাংলাদেশের অনেক কোম্পানি সঠিক টিম তৈরি করতে পারেনা। আস্তে আস্তে ঠিক করবো এইরকম একটা চিন্তা করা অধিকাংশ ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করে। কারণ কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করার পর কিছু ব্যবসায়িক সুযোগ হঠাৎ করে চলে আসে এবং আপনি সেই সুযোগগুলো নেয়ার পর সঠিক সার্ভিস আপনার কাস্টমার কোম্পানিকে দিতে পারেন না । এতে করে ওই প্রতিষ্ঠান তাদের পরিচিত প্রতিষ্ঠানের কাছে আপনার প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে ভালো সার্ভিস দিতে পারেননি সেই কথা বলে।

১০। কোম্পানি আউটসোর্স করে সব
নিজের কোম্পানির কোন প্রোডাকশন নেই এবং সবকিছু  আউটসোর্স করে কেনা । আবার সেই প্রোডাক্ট ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা । এতে করে একই প্রোডাক্টের দাম বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন দামে বিক্রি করছে । এতে ক্রেতা অসন্তোষ বেড়েছে । কোম্পানির গ্রহণযোগ্যতা হ্রাস পাচ্ছে।

১১।  কোম্পানির পুরো টিমের মাঝে সমন্বয়ের অভাব
কোম্পানির পুরো টিমের মাঝে সমন্বয়ের অভাব । কোনো ডিপার্টমেন্ট তৈরি না করা । প্রোডাক্ট সম্পর্কে কোম্পানির কলসেন্টার কর্মীদের ধারণা না থাকা এবং কোম্পানি বিহেভিয়ার বলে যে একটা বিষয় আছে সেই বিষয়ে ব্যাপক ঘাটতি থাকা। কাস্টমার এনগেজমেন্টে সবসময়ে মনোযোগ না দেয়া । পুরনো কাস্টমারদের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে ভালো উদ্যোগের অভাব। কলসেন্টার সাপোর্ট ভালো করায় ব্যর্থ হওয়া ।

১২। টার্গেট কাস্টমার তৈরি করতে ব্যর্থ
টার্গেট কাস্টমার তৈরি করতে ব্যর্থ হওয়া । নতুন কাস্টমার তৈরির পিছনে সঠিক ক্যাম্পেইনের অভাব । কাস্টমার আছে এটা ভেবে মার্কেটে প্রোডাক্ট বিক্রি করার চিন্তা বেশি। কিন্তু কাস্টমারের আসলে কি প্রোডাক্ট প্রয়োজন সেটার ব্যাপারে সচেতনতা এবং আগ্রহ তৈরি করায় ভালো টিম মেম্বার না থাকা ।

১৩। সবধরণের প্রোডাক্ট নিয়ে মার্কেটে বিক্রি শুরু করা
সবধরণের প্রোডাক্ট নিয়ে মার্কেটে বিক্রি শুরু করা কিংবা একই প্রোডাক্ট নিয়ে সব কোম্পানির কাজ করা ।  নিশ প্রোডাক্ট বা নির্দিষ্ট প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের অনীহা । এর কারণে আরও অনেক সম্ভাবনা ক্ষেত্র যে আছে তা কোম্পানির কাছে যেমন আলোচনায় থাকেনা তেমনি কাস্টমার নতুন নতুন প্রোডাক্ট সম্পর্কেও জানতে পারেনা । স্টার্টআপের সম্ভাবনাগুলো বেশিরভাগ আলোচনায় আসতে ব্যর্থ হয়।

১৪। বড় বাজেটের ফান্ড সমস্য়া
কোম্পানিগুলোর অধিকাংশই বড় বাজেটের ফান্ড নেই । সমস্যায় পরলে তা থেকে কিভাবে মুক্তি পাবে তার স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদী কোন পরিকল্পনা নেই । অর্থের সমন্বয় সাধনের ব্যাপার নেই।

১৫। কোম্পানির সঠিক কাঠামো ক্ষেত্রে সমস্য়া রয়েছে
কোম্পানির কোন নির্দিষ্ট কাঠামো নেই। ডিপার্টমেন্ট তৈরির ব্যাপারে আগ্রহ নেই । আর এতে করে কোম্পানির গতিশীলতা থাকেনা এবং একটা সময় কোম্পানিগুলো ভালো কিছু করতে পারছেনা ।

১৬। ফান্ড রাইজিং এর ব্যাপার
ফান্ড রাইজিং এর বিষয়ে এনজেল ইনভেস্টরদের মাঝে কোম্পানির ব্যাপারে তেমন আগ্রহ তৈরি করতে ব্যর্থ । কোম্পানি আসলে কোথায় যাবে সেই ব্যাপারে সঠিক কোন ডাটা বা এনালসিস রিপোর্ট তারা দিতে পারেনা।

১৭।ইনোভেশন এর অভাব
ইনোভেশন এর অভাব । সময়ের সাথে সাথে ক্রিয়েটিভ আইডিয়া এবং টিম তৈরি করা এবং সেই টিমকে পরিচর্যা করার যে একটা ব্যাপার আছে সেটা লক্ষ্য না করা ।

১৮। কত টাকা প্রয়োজন ধারণা নেই কোম্পানির
কত টাকা নিয়ে আসলে কি রকম  স্টার্টআপ শুরু করা উচিত তার কোন ধারণা নেই।

১৯। মার্কেটিং প্ল্যানিং নিয়ে কাজে সঠিক সিদ্ধান্ত  সমস্যা
সম্ভাব্য এবং বর্তমান কাস্টমারদের ডাটা নিয়ে কাজ না করা । মার্কেটিং প্ল্যানিং ঠিক না করে মার্কেটিং করা । কোন কোন প্ল্যাটফর্মে মার্কেটিং করবে তা সঠিক না জানা এবং ব্যবহার করতে না পারা।

২০।  ব্র্যান্ড ভ্যালু  তৈরিতে গুরুত্ব না দেয়া
ব্র্যান্ড ভ্যালু  তৈরিতে গুরুত্ব না দেয়া । সঠিক ব্র্যান্ড হিসেবে নিজেদের হাজির করতে না পারা এবং কত বছরের জন্যে আসলে প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের ব্র্যান্ডকে চায় সেই ব্যাপারে কোন স্পষ্ট ধারণা নেই।

২১।  ব্যবসা সম্প্রসারণের ব্যাপারে মনোযোগ কম থাকা
ব্যবসা সম্প্রসারণের ব্যাপারে মনোযোগ কম থাকা এবং অর্থের সঠিক ব্যবহার নির্দিষ্ট সময় পর পর ব্যবসার গতিশীলতার অবস্থার সাথে অবস্থা পরিবর্তনে ব্যবস্থা না নেয়া ।


source:http://blog.e-cab.net/

24
Business Incubator / How Incubator can help a Startup
« on: March 11, 2018, 09:33:56 PM »
কো-ওয়ার্কিং স্পেস  কি এবং কেন?

কো-ওয়ার্কিং স্পেস হলো যেখানে ভিন্ন ভিন্ন উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ী এক জায়গায় বসে নিজেদের ভিন্ন ভিন্ন ব্যবসায়িক ও পেশাগত কাজ সম্পাদন করতে পারবেন। বাংলাদেশে আইডিয়া একটু নতুন হলেও উন্নত বিশ্বে এটা ব্যাপক প্রচলিত এবং কার্যকর একটা ধারণা।

কেন মানুষ নিজে আলাদা অফিস না নিয়ে শেয়ারে অফিস নেয়ার মতো এই কো-ওয়ার্কিং স্পেস ব্যবহার করবে?

কো-ওয়ার্কিং স্পেস ব্যবহার করার একাধিক কারণ থাকে। বেশীরভাগ মানুষ কো-ওয়ার্কিং স্পেস ব্যবহার করে প্রথমত খরচ সেভ করার জন্য দ্বিতীয়ত নেটওয়ার্কিং বাড়ানোর জন্য। কারণ একটি আলাদা অফিস নিতে হলো পুরো একটি অফিসের ভাড়া দিতে হয়, অগ্রিম সেলামী দিতে হয়, ডেকোরেশন এবং ফার্ণিচারের জন্য বড়ো একটা বিনিয়োগ দিতে হয়। প্রতি মাসে ভাড়া, ইউটিলিটি বিল, আলাদা পিয়ন, সিকিউরিটি গার্ড, রিসিপশনিষ্ট, ইন্টারনেট বিল ইত্যাদি যাবতীয় খরচ বহন করতে হয়। আর কো-ওয়ার্কিং স্পেস এর ক্ষেত্রে এই খরচড়গুলো গায়ে লাগেনা। কারণ এগুলো তখন ২০/৩০ জনের ঘাড়ে চলে যায়। আর এখানে অনেক ধরনের লোকেরা কাজ করতে আসে বলে সকলের সাথে পরিচয় নেটওয়ার্কিং এবং আইডিয়া শেয়ার করা যায়। এছাড়া বর্তমানে আরো অনেক সুবিধা যুক্ত হয়েছে কো-ওয়ার্কিং অফিসে।

খরচ সেভ আর নেটওয়ার্কিং ছাড়া আর কি কি সুবিধা পাওয়া যায়?

আধুনিক যুগে ক্রমশ হোম অফিসের জায়গা দখল করে নিচ্ছে কো-ওয়ার্কিং স্পেস। কারণ এতে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন সুবিধা যুক্ত হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে কফিশপ, কনফারেন্স রুম, মিটিং রুম, রেকডিং স্টুডিও, হ্যাং আউট স্পেস, কোয়াইট প্লেস এছাড়া নিয়মিত অন্যান্য সুবিধা যেমন মেইল বক্স, ফোন রিসিভ, ডকুমেন্ট প্রিন্ট, ক্লায়েন্ট মিটিং ইত্যাদি সুবিধাতে রয়েছেই।

কারা মুলত কো-ওয়ার্কিং স্পেস ব্যবহার করে?

বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা যারা কম খরচে ব্যবসায় শুরু করতে চায় তাদের জন্য এটা বেশ ভালো। এছাড়া স্বাধীন পেশাজীবিরাও এমনটা করতে পারে বিশেষ করে যাদের কাছে খুব বেশী ক্লায়েন্ট আসে না। যেমন, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার, ফ্রি ল্যান্সার, আইসিটি রিলেটড ব্যবসায়। কোনো কো-ওয়ার্কিং স্পেস এর শর্তের সাথে মিললে যেকোনো ব্যবসায়ের জন্য কোওয়ার্কিং স্পেস নেয়া যায়। তবে মানুষের ভিড় হয়ে এমনন সেবামূলক ব্যবসার জন্য প্রযোজ্য নয় যেমন স্কুল, হাসপাতাল ইত্যাদি।

তাহলে কি ব্যবসায়ী বা পেশাজীবি ছাড়া কি কেউ কো-ওয়ার্কিং স্পেস ব্যবহার করতে পারবেনা?

অবশ্যই পারবে। কেউ যদি বাসায় অন্য কোথায় কাজ করার চেয়ে নিজের ব্যক্তিগত যেকোনো কাজ একা একা বসে বসে কো-ওয়ার্কিং স্পেস এ কাজ করতে চান তিনিও এখানে ডেস্ক নিতে পারেন। ভবিষ্যতে ব্যবসায়ী হবেন বা কোনো ব্যবসায় পরীক্ষামূলক কিছুদিন করবেন এমন ব্যক্তিও কো-ওয়ার্কিং স্পেস নিতে পারেন।

ই-কমার্স বা ট্যুরিজম এসব ব্যবসায়ের জন্য কো-ওয়ার্কিং স্পেস কতটা উপযুক্ত।

যদি অনলাইনে যোগাযোগ ও কাজের পরিমাণ বেশী হয় এবং ১ থেকে ৫ জনের ছোট টিম নিয়ে কাজ করেন তাহলে ই-কমার্স, ডোমেইন-হোস্টিং, ট্যুরিজম এমনি আরো অনেক ব্যবসার জন্য প্রযোজ্য। এমনকি একজন প্রিন্টিং ব্যবসায়ীও এটা ব্যবহার করতে পারেন। বিশেষ করে তার যদি নিজের প্রেস না থাকে তিনি যদি ২/৩ জনের একটা টিম নিয়ে নিজেই কাজ করেন। এবং কাজের ফিনিশগুড অফিসে না এনে প্রেস থেকে কাস্টমারকে ডেলিভারী দিয়ে থাকেন।

কো-ওয়ার্কিং স্পেস এ কাজ করার ক্ষেত্রে গোপনীয়তা থাকে কি? ব্যবসায়িক সিক্রেট ব্যাপার স্যাপারগুলো কিভাবে করবো?

প্রথমত- কো-ওয়ার্কিং স্পেস এখানে তথ্য নিরাপত্তাহীনতার কোনো ভয় নেই। কারণ প্রত্যেকে নিজস্ব ল্যাপটপে কাজ করবেন। কারো কাজ কেউ দেখার প্রশ্ন আসে না। তাছাড়া ক্লায়েন্ট এর সাথে মিটিং করার জন্য আলাদা মিটিং রুম আছে। কেউ চাইলেও সেখানে ডেস্ক এ গেষ্ট বসাতে পারবেন না। সূতরাং কারো ব্যবসায় সম্পর্কে অন্যকারো জানার সুযোগ নেই যতক্ষণ না তিনি না জানান।

কো-ওয়ার্কিং স্পেস এ অফিস নিতে বা ডেস্ক নিতে খরচ কেমন হয়?

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মাসব্যাপী ডেস্ক নিলে ৬ থেকে ১০ হাজার পর্যন্ত ভাড়া আসে। এছাড়া ঘন্টা হিসেবেও অনেক জায়গায় বিল হয় সেমন ঘন্টা ৫০ থেকে ৮০ টাকা। এছাড়া ডেডিকেটেড ডেস্ক, কোয়াইটে প্লেস, সেপারেট অফিস রুম এর ক্ষেত্রে আরেকটু বেশী হয়ে থাকে। এই খরচের মধ্যে ভাড়া, বিদ্যুৎ ইন্টারনেট বিল রয়েছে। মিটিং রুম, কনফারেন্স রুম, স্টুডিও, প্রিন্টিং সুবিধা, ফটোকপি, ফোনকল, লকার কপিশপ এসব ব্যবহারের জন্য আলাদা ফি দিতে হয়।

ঢাকায় কোথায় কোথায় এ ধরনের কো ওয়ার্কিং স্পেস আছে?

গুলশান, বাড্ডা, মগবাজার, বনানী, উত্তরা ও মিরপুরে এ ধরনের কো ওয়ার্কিং স্পেস আছে।

এক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্স পেতে কোনো সমস্যা হয় কিনা?

যদি কো-ওয়ার্কিং স্পেস কতৃপক্ষ আপনার সাথে বাড়ী ভাড়ার চুক্তি করে মানে স্পেসটার মালিক তারা নিজেরা হয় এবং তারা আপনাকে অনুমতি দেয় তাহলে আপনি অবশ্যই অফিস ভাড়ার দলিল পেশ করে সেই ঠিকানায় ট্রেড লাইসেন্স করে নিতে পারবেন।



কো-ওয়ার্কিং স্পেস এর ঠিকানা কি আমি কাগজে কলমে ব্যবহার করতে পারবো মানে ভিজিটিং কার্ড ও প্যাডে, এই ঠিকানায় কি আমার চিঠি আসবে বা আমি কি অফিসের প্রবেশপথে ছোট সাইনবোর্ড বা নেমপ্লেট দিতে পারবো? আমার ফোন আসলে কি তারা রিসিভ করবে।

এগুলো নির্ভর করছে কো-ওয়ার্কিং স্পেস কতৃপক্ষের পলিসির উপর।  লেটার হেড ও বিজনেস কার্ডে ঠিকানা ব্যবহার করতে অনেক কো-ওয়ার্কিং স্পেস কতৃপক্ষ অনুমতি দেয়। চিঠি আসার ক্ষেত্রে কেউ কেউ আলাদা চার্জ করে থাকে।  আর কোনো কোনো অফিস নেমপ্লেট এলাউ করে কোনো কোনো অফিস করে না। আপনি প্রয়োজনে আগে জেনে নিতে পারেন। আর ফোন সুবিধার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। কোনো কোনো অফিসে এই সুবিধা থাকে তবে অবশ্যই সেজন্য আলাদা পেমেন্ট দিতে হয়।


Source: http://blog.e-cab.net/

25
Venture Capital / Venture Capital & Venture Partner
« on: March 11, 2018, 09:29:00 PM »
বাংলাদেশে মানুষ বেশী কিন্তু সুযোগ ও কর্মসংস্থান সীমিত। আগে থেকেই প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম আমরা চাকরির পেছনে ছুটেছি বলে আমাদের ব্যবসায়িক খাত উন্নত হয়নি। ১৭ কোটি মানুষের বাজারে তাদের চাহিদার  েআলোকে আমরা নিজেরাই নিজেদের জন্য অনেক কিছু প্রস্তুত ও বাজারজাত করতে পারতাম। সে সযুযোগটা ছিলো। কিন্তু বিভিন্ন কারণে সেটা না হয়ে আমরা বরং বিদেশী বনিকদের ব্যবসায় দিয়ে যাচ্ছি বিদেশী পন্যের বাজার ও খদ্দেরে পরিণত হয়েছি গোটা জাতি। দেশের ব্যবসায়িক খাত আশানুরুপ উন্নতি না হওয়ার কারণে আমাদের মানসিকতা যেমন চাকরীমুখী ও বিদেশী পন্য মুখী প্রবণতা। তবে দুটো সমস্যা রয়েছে একটা পুঁজি সংকট অন্যটি হলো উদ্যোক্তাদের দক্ষতার অভাব। পুঁজি সমস্যার সমাধানে বর্তমানে ব্যাংক লোন ছাড়াও বেশকিছু সমাধান  এসেছে তারমধ্যে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল, ভেঞ্চার পার্টনার ক্রাউড ফান্ডিং এবং অগ্রিম বিক্রয়। আগের একটা লেখায় আমি গতানুগতিক পুঁজি সংগ্রহের বিষয়গুলো আলোচনা করেছি। আজ আলোচনা করবো ভেঞ্চার পার্টনার ও ভেঞ্চার ক্যাপিটাল নিয়ে।

ব্যাংক সাধারণত ঋল দেয়ার ক্ষেত্রে কি করে?  যেসব ব্যবসা লাভের মুখ দেখেছে কিনা? কয়েকবছর বয়স হলো কিনা? আবার উদ্যোক্তার নিজের কোনো স্থায়ী সম্পদ আছে কিনা? বলা বাহুল্য বেশীরভাগ তরুন এবং সৃজনশীল উদ্যোক্তারা বাদ পড়ে যান। লিজিং কোম্পানীর ক্ষেত্রে একই সমস্যা। তখন হতাশার কালো ছায়া ঘিরে আসে চার দিক থেকে। কারণ পরিবার থেকেতো আগেই নিষেধ করা হয়েছে।

ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি কোনো  লোন দেয়না উদ্যোক্তার অংশীদার হিসেবে কাজ করে; মানে ব্যবসায়ের লাভ লোকসানের অংশীদার হয়। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে তার কোম্পানি পরিচালনায় অংশ গ্রহণ করে যাতে কোম্পানি লোকসানের মুখে না পড়ে৷ তবে এর অর্থ এই নয়যে তারা কোম্পানীর মালিক হয়ে যায়। বা কোম্পানীতে গেঁড়ে বসে।

ভেঞ্চার ক্যাপিটাল আপনার পার্টনার (অংশীদার) হবে এবং অল্প পরিমাণ শেয়ার নিবে, মজার ব্যপার হচ্ছে প্রাধান্য আপনারই বেশি থাকবে যাকে ইংরেজিতে মেজরেটি বলে থাকি। মানে বেশীরভাগ শেয়ার ভেঞ্চার ক্যাপিটাল নিয়ে যায়না ব্যবসায়ের বেশীরভাগ শেয়ার এবং কতৃত্ব উদ্যোক্তারই থাকে। তবে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল চাইবে আপনাকে কীভাবে সফলতায় নিয়ে যাওয়া যায়।
কিন্তু ব্যাংক তার উল্টো আপনি কিভাবে ব্যবসা করেছেন বা কিভাবে লাভ লস করেছেন সেটা আপনার ব্যাপার আপনি ঋনের টাকা ও সুদ পরিশোধ করতেই হবে। ব্যাংক সাধারণত নতুন উদ্যোক্তাদের ফাইন্যান্স করেনা কিন্তু এখানে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম একটা ভরসার জায়গা৷

তবে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল থেকে বিনিয়োগ পাওয়ার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সেক্ষেত্রে আপনাকে আপনার ব্যবসায়িক আইডিয়া শেয়ার করতে হবে। আপনাকে পুরো বিজনেস প্লান দেখাতে হবে। ব্যবসায়ের লিগাল ডকুমেন্ট গুলো বানাতে হবে। একটি কোম্পানী প্রোফাইল কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রজেক্ট প্রোফাইল তৈরী করতে হবে। এবং বিনিয়োগ পরিকল্পনায় বাজেট, খরচ সম্ভাব্য আয় সবকিছু ছক ও চাট আকারে তুলে ধরতে হবে। একটি মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টশানের মাধ্যমে ও সরাসরি সাক্ষাৎকারে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন প্রশ্নে জবাব দিয়ে তাদেরক বিষয়টা বোঝাতে হবে।

সাধারণত একটা ধারণা রয়েছে যে, যে বিজনেস আইডিয়াটা সঠিক কিংভা যেটা মানুষের মাঝে সাড়া ফেলবে বা সফল হবে । সেটাকে তুলে ধরার জন্য ৩ থেকে ৫ মিনিটের বক্তব্য যথেষ্ঠ। তাই বেশীরভাগ ক্ষেত্রে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্মগুলো ৩ মিনিট সময় দিয়ে থাকে উদোগটাকে ব্যাখ্যা করার জন্য। প্রিয় উদ্যোক্তা আপনার নতুন উদ্যোগের সমস্যা, সম্ভাবনা, পলিসি এবং কৌশলগত দিক সব ৩ মিনিটেই বলার বা প্রেজেন্ট করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এটা আপনার কাজে লাগবে। অবশ্য বিস্তারিত পরিকল্পনার জন্য ইন্টারনেট ঘেঁটেও আপনি অনেক কিছু শিখতে পারেন।

আজকের বিশ্বের বড়ো বড়ো প্রতিষ্ঠান গুগল, ফেসবুক, মাইক্রোসফট এদের পেছনে রয়েছে বড়ো বড়ো ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্মগুলোর সহায়তা।

বাংলাদেশে যেসব ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম রয়েছে। তাদের একটি এসোসিয়েশনও আছে। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড প্রাইভেট ইক্যুইটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ। https://vcpeab.org/

ভেঞ্চার ক্যাপিটাল সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন।

BD VENTURE LTD – WE INVEST IN YOUR GROWTH: BDVENTURE.COM
ANGEL AND VENTURE CAPITAL: http://HTTP://WWW.VENTURE.COM.BD/
CAPM VENTURE CAPITAL & FINANCE LIMITED: http://HTTPS://FUTURESTARTUP.COM
CVCFL- CVCFL PLANS TO HAVE A DIVERSIFIED AND INNOVATIVE RANGE OF PRODUCTS AND SERVICES CORPORATE FINANCERATEFINANCE. SERVICE:
WELCOME TO CVCFL: WWW.CVCFLBD.COM
BANGLADESH – FENOX VENTURE CAPITAL: WWW.FENOXVC.COM
VENTURE INVESTMENT PARTNERS BANGLADESH LIMITED (VIPB): VIPBLIMITED.COM
CAPM (CAPITAL & ASSET PORTFOLIO MANAGEMENT) COMPANY LIMITED: HOME
www.capmbd.com

এবার আসি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল এবং ভেঞ্চার পার্টনারের বিষয়ে।

ভেঞ্চার ক্যাপিটাল এবং ভেঞ্চার পার্টনার আদতে একই হলেও অল্প কিছু পার্থক্য রয়েছে। এবং কিছু বিষয়ে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠার অনুযায়ী ভিন্ন হয়ে থাকে। যেসব বিষয় এক সেটা ভেঞ্চার ক্যাপিটেলের মতো ভেঞ্চার পার্টনার কোনো মর্টগেজ রাখেনা, লোন দেয়না বা লোনের ইন্টারেস্ট নেয়না। আর পার্থক্যের জায়গা হলো ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অনেক সময় ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা দিলেও ভেঞ্চার পার্টরনার বেশীরভাগ ক্ষেত্রে টাকা দেয়না। তারা পন্য কিনে দেয়, অথবা পন্য বা সেবার পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়। সে পন্য বা সেবার মূল্য বিনিয়োগ হিসেবে গন্য করে। কোনো ক্ষেত্রে কোম্পানীর অংশীদার হয়ে থাকে মূলত তারা ইকুইটি শেয়ার করে। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল যেমন ৩ থেকে ৮ বছর পর তাদের বিনিয়োগকৃত টাকা তুলে লাভসহ ফিরে যায় মাঝখান একজন নবীন উদ্যোক্তা বড় ব্যবসায়ী ‍হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। বিদেশী ভেঞ্চার পার্টনাররা এমন করলেও দেশী ভেঞ্চার পার্টনাররা অনেক সময় কোম্পানী অধিকার করে নেয় অথবা কিনে নেয়। অবশ্যই লাভজনক কোম্পানী হলে তারা ন্যায্যমূল্যে কেনে আর লোকসান ফার্ম হলে কেনার প্রশ্ন উঠেনা। যদিও কেনে সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ বা সরকারী বিধিমতে কোম্পানীর ভ্যালুয়েশন করে নেয়।

বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত অসেক বড়ো বড়ো ব্যবসায়ী এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভেঞ্চার পার্টনার হয়ে থাকে। এর মধ্যে দুটো উল্লেখযোগ্য ভেঞ্চার পার্টনার হলো বেস্টওয়ে গ্রুপ এবং গ্রীণবাংলা ফাউন্ডেশন।


source:http://blog.e-cab.net/

26
Business Legal Act / Consumer Act of BD
« on: March 10, 2018, 06:10:32 PM »
বাংলাদেশে ক্রেতাদের জন্য ভোক্তা অধিকার আইন নামে একটি আইন আছে। আমরা অনেকেই এই ব্যাপারে সঠিক তথ্য জানি না। ভোক্তা অধিকার আইনটি ২০০৯ সালে আমাদের দেশে চালু হয়েছে। এই আইনটির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে-

১. ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ ও উন্নয়ন।
২. ভোক্তা অধিকারবিরোধী কার্য প্রতিরোধ।
৩. ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘনজনিত অভিযোগ নিষ্পত্তি।
৪. নিরাপদ পণ্য বা সেবা পাওয়ার ব্যবস্থা।
৫. কোনো পণ্য বা সেবা ব্যবহারে ক্ষতিগ্রস্ত ভোক্তাকে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা।
৬. পণ্য বা সেবা ক্রয়ে প্রতারণা রোধ।
৭. ভোক্তা অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টি।

ভোক্তা কোন কোন ব্যাপারে সুবিধা ও নালিশ করতে পারবেন
১. নির্ধারিত মূল্য অপেক্ষা অধিক মূল্যে কোনো পণ্য, ওষুধ বা সেবা বিক্রয় বা বিক্রয়ের প্রস্তাব করলে
২. জেনেশুনে ভেজাল মিশ্রিত পণ্য বা ওষুধ বিক্রি বা বিক্রির প্রস্তাব করা হলে
৩. স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিকারক দ্রব্য মিশ্রিত কোনো খাদ্য পণ্য বিক্রি বা বিক্রির প্রস্তাব করলে
৪. মিথ্যা বিজ্ঞাপন দ্বারা ক্রেতা সাধারণকে প্রতারিত করা হলে
৫. ওজনে কারচুপি, বাটখারা বা ওজন পরিমাপক যন্ত্রে কারচুপি, পরিমাপে কারচুপি, দৈর্ঘ্য পরিমাপক ফিতা বা অন্য কিছুতে কারচুপি করা হলে
৬. কোনো নকল পণ্য বা ওষুধ প্রস্তুত বা উৎপাদন করা হলে
৭. মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য বা ওষুধ বিক্রি বা বিক্রির প্রস্তাব করলে
৮. নিষিদ্ধঘোষিত কোনো কাজ করা যাতে সেবাগ্রহীতার জীবন বা নিরাপত্তা বিপন্ন হতে পারে।
৯. অবৈধ প্রক্রিয়ায় পণ্য উৎপাদন বা প্রক্রিয়াকরণ করা।
১০. অবহেলা, দায়িত্বহীনতা দ্বারা সেবাগ্রহীতার অর্থ বা স্বাস্থ্যহানি ঘটানো।
১১. কোনো পণ্য মোড়কাবদ্ধভাবে বিক্রয় করার এবং মোড়কের গায়ে পণ্যের উপাদান, সর্বোচ্চ খুচরা বিক্রিমূল্য, মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ, ইত্যাদি লিপিবদ্ধ করার বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন করা।
১২. আইনানুগ বাধ্যবাধকতা অমান্য করে দোকান বা প্রতিষ্ঠানের সহজে দৃশ্যমান কোনো স্থানে পণ্যের মূল্যের তালিকা প্রদর্শন না করা হলে

ভোক্তা কীভাবে প্রতিকার চাইতে পারেন?
অভিযোগটি পণ্য কেনার ৩০ দিনের মধ্যে করতে হবে। ঢাকার কারওয়ান বাজারে অবস্থিত ভোক্তা অধিদপ্তরে (মহাপরিচালক, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, ১ কারওয়ান বাজার, টিসিবি ভবন, ৮ম তলা, ঢাকা) এই ঠিকানায় বিনামূল্যে লিখিত অভিযোগ করতে হবে। অভিযোগকারী তার পূর্ণাঙ্গ নাম, বাবা ও মায়ের নাম, ঠিকানা, ফোন, ফ্যাক্স ও ই-মেইল নম্বর (যদি থাকে) এবং পেশা উল্লেখ করবেন। প্রাথমিক তদন্ত করবে ভোক্তা অধিদপ্তর এবং তদন্তে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেলে করা হবে মামলা। অভিযোগ প্রমাণিত হলে যে পরিমাণ আর্থিক জরিমানা করা হবে, তার ২৫ শতাংশ অভিযোগকারী ভোক্তাকে ক্ষতিপূরণ বাবদ দেওয়া হয়।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের সাজা
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে পণ্যে ভেজাল বা নকল পণ্য উৎপাদন বা বিক্রি করলে কিংবা বিক্রির সময় ওজন বা মাপে কারচুপি করলে এক থেকে তিন বছর কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান করা হয়েছে। এ ছাড়া মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ বা অন্য যে কোনো পণ্য বিক্রি বা বিক্রির প্রস্তাব করলে অনূর্ধ্ব এক বছর কারাদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ড হওয়ারও বিধান রয়েছে। তা ছাড়া মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয় এমন কোনো পণ্য উৎপাদন বা প্রক্রিয়াকরণ করলে দুই বছর কারাদণ্ড এবং অনধিক দুই লাখ টাকা জরিমানা, মিথ্যা বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতাদের প্রতারিত করলে এক বছর কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, পণ্য বিক্রয়কারীর পরিমাপক যন্ত্র বা বাটখারা প্রকৃত ওজনের চেয়ে কম হলে এক বছরের কারাদণ্ড কিংবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, পণ্যের মোড়কের গায়ে ওজন, পরিমাণ, উৎপাদন এবং মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ উল্লেখ করা বাধ্যতামূলক। এ নিয়ম মানা না হলে এক বছর কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, দোকানে কোনো দৃশ্যমান স্থানে পণ্যের মূল্যের তালিকা ঝুলিয়ে রাখতে হবে; এ নিয়ম না মানলে এক বছর কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বা তার ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা কিংবা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটরা বা তাদের ক্ষমতাপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা প্রশাসনিক ব্যবস্থায় জরিমানা আরোপ, ব্যবসার লাইসেন্স বাতিল বা ব্যবসায়িক কার্যক্রম সাময়িক বা স্থানীয়ভাবে স্থগিত করতে পারবেন।

27
Inspirational Story/Quote / Light of Hope
« on: March 05, 2018, 08:24:02 PM »
মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড চালু করেছে ‘উদয়ন’ নামে নতুন একটি প্রকল্প। ব্যাংকটি এ প্রকল্পের আওতায় দেশের শিক্ষিত মেধাবী তরুণদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার নিমিত্তে ব্যবসা শুরুর জন্য অর্থায়ন করছে। মার্কেন্টাইল ব্যাংক এরই মধ্যে নতুন কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে সিড ক্যাপিটাল হিসেবে অর্থ বিনিয়োগ করেছে। সোস্যাল এন্টারপ্রাইজ কোম্পানি ‘লাইট অব হোপ’ এ ব্যাংকের বিনিয়োগ পেয়েছে। সম্প্রতি বণিক বার্তার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত জানান পরিচালক মুকুল আলম। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বকুল রায়


লাইট অব হোপ কী ধরনের সেবা দিচ্ছে?
ডিজিটাল শিক্ষাভিত্তিক একটি স্টার্টআপ লাইট অব হোপ। শিক্ষা ব্যবস্থার দায়িত্ব হলো শিশুদের ভবিষ্যত্ পৃথিবীর জন্য উপযোগী করে তৈরি করা। যাতে তারা তাদের দক্ষতা দিয়ে সমাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে। প্রযুক্তির কারণে পৃথিবী এখন এত দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে যে, বিদ্যমান শিক্ষা ব্যবস্থা সে তুলনায় অনেক সেকেলে এবং অনেকাংশে শিশুদের প্রস্তুত করতে ব্যর্থ হচ্ছে। তাহলে শিশুদের কীভাবে আমরা ভবিষ্যত্ পৃথিবীর জন্য প্রস্তুত করব?

বিভিন্ন প্রযুক্তির সহায়তায় আমরা শিশুদের সৃজনশীলতা ও সমস্যা সমাধানের দক্ষতা, মনঃসামাজিক বুদ্ধিমত্তা ও নৈতিকতা শেখাতে কাজ করছি। আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যবস্থায় শিশুদের এসব বিষয়ে শিক্ষা দেয়া হয় না। বিশ্বব্যাংকের একটি জরিপে উঠে এসেছে, যেসব শিশু এখন প্রাইমারি পর্যায় পড়ছে, তার ৭০-৮০ শতাংশ ভবিষ্যতে এমন একটি চাকরিতে ঢুকবে, যার কোনো অস্তিত্ব এখন নেই। অর্থাত্ সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

লাইট অব হোপ শুধু শিক্ষার্থী নয়, শিক্ষক ও অভিভাবকদের উন্নয়নেও কাজ করছে।

সোস্যাল এন্টারপ্রাইজ উদ্যোগ নিয়ে আগ্রহী হলেন কেন?

শুরুতে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন। কেউ অর্থ সহায়তা দিলে কাজ করা সম্ভব হয়। এছাড়া অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে খারাপ দিক হলো আর্থিক সহায়তাকারীর ইচ্ছামতো কাজ করতে হয়। শেষ পর্যন্ত আমরা সিদ্ধান্ত নিই অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কার্যক্রম জোরদার সম্ভব নয়। কাজেই সোস্যাল এন্টারপ্রাইজ স্টার্টআপ হিসেবে কার্যক্রম শুরু করি।

শিশুর ভবিষ্যত্ গড়তে কোন ধরনের ডিজিটাল কনটেন্ট সরবরাহ করছেন?
উন্নত বিশ্বের একটি শিশু যেসব সুবিধা পাচ্ছে, আমাদের দেশের শিশুরা সেসব সুবিধা পাচ্ছে না। বাইরের শিশুরা বিভিন্ন ডিভাইসের মাধ্যমে যে ধরনের ডিজিটাল শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে, দেশে সে সুযোগ নেই। আমরা এ ব্যবধানটা দূর করতে কাজ করছি। চেষ্টা করছি কীভাবে খুব স্বল্প মূল্যে অফলাইন এবং অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমে দেশব্যাপী আইসিটিনির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা ছড়িয়ে দেয়া যায়।

শিশুদের হাতে স্মার্টফোন বা ইন্টারনেট দেয়া যাবে না, এ কথার কোনো ভিত্তি নেই। বরং নিশ্চিত করতে হবে আপনার শিশু ইন্টারনেটে কী দেখছে। লাইট অব হোপ শিশুর শিক্ষার জন্য ডিজিটাল কনটেন্ট উন্নয়ন করছে। আমাদের ওয়েবসাইটে ডিজিটাল শিশু শিক্ষার কনটেন্টের একটা বড় অনলাইন স্টোর হয়ে গেছে। শিশুরা যাতে বিজ্ঞান নিয়ে আগ্রহী হয়, সেজন্য আমরা ‘রোবটিকস’ নামে একটি কোর্স চালু করেছি।

আপনারা এ পর্যন্ত কতগুলো প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও শিশুতোষ বই দিয়ে লাইব্রেরি এবং মোবাইল বিজ্ঞানাগার করে দিতে পেরেছেন?
সৌরবিদ্যুত্চালিত মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম নিয়ে আমাদের প্রত্যাশা অনেক বড় ছিল। কিন্তু সে অনুযায়ী এগোতে পারিনি। এটা খুব বেশি ব্যয়বহুল ছিল। কারো সহায়তায় আমরা প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিটি প্রাথমিক স্কুলে সৌরবিদ্যুত্চালিত মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম করে দেব সেটা সম্ভব হয়নি। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে এ পর্যন্ত ছয়টি স্কুলে সৌরবিদ্যুত্চালিত মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম করে দিতে পেরেছি। ১০৬টি স্কুলে শিশুতোষ বই দিয়ে লাইব্রেরি এবং পাঁচটি মোবাইল বিজ্ঞানাগার করে দেয়া সম্ভব হয়েছে। এছাড়া আমরা দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ২৮টি স্পুটনিক (পোর্টেবল সৌরবিদ্যুত্চালিত মাল্টিমিডিয়া সেটআপ) সরবরাহ করেছি।

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্কুলগুলোর শিক্ষকদের নিয়ে কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করেন?

হ্যাঁ, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রাথমিক স্কুলগুলোর শিক্ষকদের নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছি। শুরুতেই বলেছিলাম, লাইট অব হোপ একটি সোস্যাল এন্টারপ্রাইজ স্টার্টআপ। কাজেই সোস্যাল এন্টারপ্রাইজ প্রতিষ্ঠানের মজার দিক হলো, রাজস্ব আয়ের পাশাপাশি এমন কিছু কাজ থাকতে হয়, যা সমাজে প্রভাব সৃষ্টি করে। কাজেই আমরা শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। চেষ্টা করি প্রশিক্ষণগুলোয় অংশ নেয়া শিক্ষকদের ২০ শতাংশ প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত স্কুলগুলোর শিক্ষকদের রাখার। প্রশিক্ষণ দানের জন্য আমরা কখনো কখনো বিভিন্ন অঞ্চলে যাই। কিছু ক্ষেত্রে আমাদের সেন্টারে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করি।

কার্যক্রম পরিচালনায় সরকারি বা বেসরকারি কোনো সহায়তা পেয়েছেন কিনা?
লাইট অব হোপ বেসরকারি খাত থেকে বেশকিছু সহায়তা পেয়েছে। সরকারি সহায়তা বলতে আমরা বাংলাদেশ ন্যাশনাল কমিশন ফর ইউনেস্কোর (বিএনসিইউ) একটি প্রোগ্রামে অংশ নিয়েছিলাম। সেখানে কোরিয়ান ন্যাশনাল কমিশন ফর ইউনেস্কো (কেএনসিইউ) আমাদের কিছু তহবিল দেয়। যেটা দিয়ে আমরা কার্যক্রম সম্প্রসারণ করি। অস্ট্রেলিয়ান একটি কোম্পানি স্পার্কের সঙ্গে আমরা যৌথভাবে কাজ করেছি। পরবর্তীতে এ প্রতিষ্ঠান থেকেও আমরা তহবিল পাই। স্পার্ক এখন পর্যন্ত আমাদের বিভিন্ন দিক থেকে পরামর্শ সহায়তা দিয়ে আসছে।

লাইট অব হোপের কার্যক্রম ঘিরে কোনো বাধার সম্মুখীন হতে হয় কিনা?
বিভিন্ন ধরনের বাধার সম্মুখীন হতে হয়। কারণ আমরা যে ধরনের কাজ করি, তা বাংলাদেশে আর কোনো প্রতিষ্ঠান করে না। বৈশ্বিকভাবেও লাইট অব হোপের মতো কাজ করছে, তেমন কোনো প্রতিষ্ঠান পাইনি। কাজেই কোনো একটি বিষয় নিয়ে একেবারে নতুন করে শুরু করতে হয়। তা কাজে লাগাতে হয় এবং ছোটখাটো ভুলত্রুটিগুলো ধীরে ধীরে ঠিক করে নিতে হয়। আমরা যে বিষয় নিয়ে কাজ করছি, তার কোনো মডেল নেই, যে আমরা সেটা অনুসরণ করব। এটা একটা বড় ধরনের বাধা। আরেকটি বড় বাধা হলো, আমরা যে কাজটা করছি সেটা মানুষকে বোঝানো। কারণ মা-বাবাদের মাইন্ড সেটআপ একটা নির্দিষ্ট জায়গায় স্থির থাকে। তারা সবসময় চান শিশুকে স্কুলে প্রথম, দ্বিতীয় বা তৃতীয় হতে হবে। কিন্তু প্রতিটি শিশু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্মায়। তার নিজের মতো করে কিছু করার ক্ষমতা থাকে।

লাইট অব হোপ ‘কিডস টাইম’ ব্র্যান্ড নিয়ে বলুন।

‘কিডস টাইম’ হলো লাইট অব হোপের একটি পৃথক উইং। এটি শিশুদের সৃজনশীলতা বৃদ্ধির আফটার স্কুল প্রোগ্রাম। কিডস টাইম এখন রাজধানীতে চারটি সেন্টারে চলছে। চট্টগ্রামেও আমাদের একটি সেন্টার চালু করা হয়েছে। সাভারে একটি সেন্টার চালুর পর্যায়ে রয়েছে। কিডস টাইম উইং হলো চার থেকে ১২ বছরের শিশুদের জন্য। তাদের ভবিষ্যতের প্রয়োজনীয় দক্ষতা বৃদ্ধির আফটার স্কুল প্রোগ্রাম।

লাইট অব হোপ নিয়ে ভবিষ্যত্ পরিকল্পনা কী?
লাইট অব হোপ এখন বাংলাদেশকেন্দ্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বাংলাদেশের পাশাপাশি বৈশ্বিকভাবে এর কার্যক্রম ছড়িয়ে দিতে চাই।

মার্কেন্টাইল ব্যাংকের উদয়ন প্রকল্প আপনার স্বপ্ন বাস্তবায়নে কতটুকু সহায়তা দিতে পেরেছে?
মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেডকে ধন্যবাদ দিতে চাই। স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোর জন্য ব্যাংক মানে খুব জটিল কিছু। এজন্য স্টার্টআপ কোম্পানি সহজে ব্যাংকের কাছে যেতে চায় না। ব্যাংকগুলোও অনেক সময় আমাদের কথা শুনতে চায় না। এক কথায় উভয় দিক থেকে একটা নেতিবাচক ধারণা কাজ করে। কিন্তু মার্কেন্টাইল ব্যাংক সে ধারণা বদলে দিয়েছে। ব্যাংকটি আমাদের আর্থিক সহায়তা নয়, আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। বিষয়টা এ রকম যে, তোমরা তো স্টার্টআপ, তোমাদের কেউ এখনো স্বীকৃতি দেয়নি। কিন্তু আমরা তোমাদের বিশ্বাস করি। তোমরা এগিয়ে যাও, আমরা তোমাদের সঙ্গেই আছি। দেশের একটি প্রতিষ্ঠিত ব্যাংকের কাছ থেকে এমন সমর্থন পাওয়ার চেয়ে বড় আর কী হতে পারে?


28
সহজ-সরল, বিনয়ী ও মিষ্টভাষী একজন মানুষ। এক কথায় ভীষণ মিশুক। কথা বলতে গেলেই কখনো উদাহরণ টানেন পাশ্চাত্যের জ্ঞানগুরুদের, কখনো ইসলামের কালজয়ীদের, কখনো বা মানবধর্মের মহামানবদের। নিজেও জীবনযাপন করেন সৎ ও সত্যতার নিরেট এক প্লাটফরমে। খুঁজে বেড়ান জীবনের মানে। মানুষটিকে কেউ ডাকেন সুফি সাহেব, কেউ বা মিজান সাহেব। পুরো নাম সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। ‘পিএইচপি ফ্যামিলি’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান তিনি। ব্যবসার জগতে সফল এক কিংবদন্তি। জীবনের এই স্বর্ণশিখরে এসে শোনালেন নিজের ভাঙা-গড়ার নানা গল্প। বললেন বলা-না বলা সব স্বপ্ন ও সম্ভাবনার কথা।


ছেলেবেলা

ছেলেবেলায় মাকে হারিয়েছেন সুফি মিজান। জন্ম থেকেই শান্তশিষ্ট স্বভাবের মানুষ তিনি। বাবার কঠিন অনুশাসনে বড় হয়েছেন। অল্প বয়সে মাকে হারিয়ে বাবার কাছ থেকে পেয়েছেন দ্বিগুণ স্নেহ-ভালোবাসা। তার ভাষায়, ‘আমাকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করার জন্য আমার আব্বা নতুন করে সংসারধর্ম করেননি। আমিই ছিলাম তার জীবনের সব। প্রতিদিন সকালে আব্বা নিজ হাতে আমাকে গোসল করাতেন। নাস্তা খাওয়াতেন। হাত ধরে স্কুলে নিয়ে যেতেন। আবার স্কুল ছুটির আগেই স্কুলের সামনে গিয়ে বসে থাকতেন। ক্লাস ওয়ান থেকে সিক্স পর্যন্ত তিনি এমনটিই করেছেন।’

তিনি বলেন, আজ দুঃখ হয়, সমাজের কোমলমতি শিশুরা নষ্ট হয় যাচ্ছে। এই সমাজে ঐশীর মতো সন্তান তৈরি হচ্ছে। এর কারণ হিসেবে তিনি সন্তানদের বাবা-মায়ের সময় না দেওয়াকে দায়ী করেন। আক্ষেপ করে বলেন, ‘আজ আমরা সন্তানদের সময় দিই না, আদর করি না, মায়া করি না। তাদের অনুপ্রাণিত বা উজ্জীবিত করতে পারি না। তাদের মনের মধ্যে বড় স্বপ্ন তৈরি করতে আমরা ব্যর্থ হই। চব্বিশ ঘণ্টা কেবল টাকার জন্য পাগলের মতো ছুটে বেড়াই। স্ত্রী-সন্তান, বাবা-মা, আত্মীয়স্বজন কিংবা দেশের সাধারণ মানুষের সঙ্গে যে আত্মার সম্পর্ক তা ভুলে যাই।’

কষ্টের শিক্ষা জীবন

স্কুল জীবন মোটামুটি শেষ হলেও কলেজ জীবনেই অনেকটা কষ্টের শুরু সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের। কলেজ জীবনে আর দশ জনের মতো বন্ধুদের সঙ্গে খুব একটা আড্ডাবাজির সুযোগ পাননি তিনি। ইন্টারমিডিয়েট পাস করেই চাকরি শুরু করেছিলেন। সারা দিন কাজ করতেন। সন্ধ্যা ৬টায় নাইট কলেজে গিয়ে বসতেন। সারা দিন হাড়ভাঙা পরিশ্রমের পর রাত ১১টা পর্যন্ত ক্লাস করতেন। কেবল তাই নয়, ৪ মাইল হেঁটে বাড়ি ফিরতেন গভীর রাতে। এরপর নিজে হাতেই রান্নাবান্না করে খেতেন। আবার সকাল ৮টা থেকে অফিস। কাজের ফাঁকে ফাঁকেই টিউশনি ও নিজের লেখাপড়া করছেন। অর্থনৈতিক দুরবস্থার কারণে সাংসারিক প্রয়োজনেই ছাত্র জীবন থেকে এমন কষ্ট করতে হয়েছে তাকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাচেলর ডিগ্রি নিয়েছেন তিনি।

লেবু চুরি ও জীবনের শ্রেষ্ঠ শিক্ষা

প্রাইমারিতে পড়ার সময় লেবু চুরির একটি ঘটনা থেকে জীবনের শ্রেষ্ঠ শিক্ষা নিয়েছেন সুফি মিজান। আজও সেই শিক্ষা তার চলার পথের পাথেয়। মজার সেই ঘটনাটি বর্ণনা করেছেন এভাবে : ‘গরমের দিন। বৈশাখ-চৈত্র মাস। বাড়িতে শুঁটকির ভর্তা বানানো হয়েছে। আমাদের কাছে তখন শুঁটকি ভর্তার সঙ্গে লেবু খুব উপাদেয় খাদ্য ছিল। তো বাবার সামনে লেবু কেটে দেওয়া হলো। বাবা খেতে গিয়ে বললেন, আজকে তো লেবু কিনি নাই। লেবু কোত্থেকে এলো? আমি মনে মনে ভাবলাম বাবাকে যদি বলি আমরা বন্ধুরা মিলে পাশের জমিদারবাড়ি থেকে লেবু চুরি করে এনেছি তাহলে বুঝি বাবা খুব খুশি হবেন। বলেও ফেললাম তাই।

আব্বা বিদ্যুতের মতো গর্জন দিয়ে উঠলেন। বললেন, কী বললে! তুমি মানুষের বাড়িতে লেবু চুরি করতে গেছ! আমি তোমাকে লেখাপড়া শেখাচ্ছি ভালো মানুষ করার জন্য আর তুমি লেবু চুরি করতে গেছ! কাঠের পিঁড়িতে বসে খাচ্ছিলেন। হঠাৎ একটা পিঁড়ি হাতে নিয়ে আমাকে মারতে গেলেন। সঙ্গে সঙ্গে আমি দৌড়ে বের হয়ে গেলাম। আমাকে বললেন, সব লেবু নিয়ে ওদের বাড়িতে দিয়ে এসো। মনে আছে, অপরাধীর মতো দাঁড়িয়ে এক হাতে লেবু, আরেক হাতে চোখের পানি মুছছিলাম। ক্লাস থ্রি-ফোরে পড়ার সময় বাবা এই যে একটা অনুশাসন দিলেন তা সারা জীবনের মতো মনে গেঁথে গেল। প্রথমে ভেবেছিলাম বাবা বুঝি খুব নিষ্ঠুর। কিন্তু না। এখন মনে করি ওইটা আমার শ্রেষ্ঠ শাসন ছিল। দয়া ছিল।

আর সে কারণেই আজ এই ৭৫ বছর বয়সেও কোনো মানুষের জিনিসে হাত দিই না। অবৈধ কোনো কিছু মনেও আসে না। কেবলই বাবার সেই অনুশাসনের কথা মনে হয়। যেন অতন্দ্র প্রহরীর মতো দাঁড়িয়ে আছেন আমার বাবা।’ সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘টোকিও থেকে ভ্যানকুভার, উত্তর থেকে দক্ষিণ গোলার্ধ অনেক জায়গায় গিয়েছি। ব্যবসায়িক জীবনে বহু মানুষের সঙ্গে লেনদেন করেছি। কিন্তু কেউ বলতে পারবে না, মিজান সাহেবের কাছে ৫টা টাকা পাওনা আছে। মানুষের হক, বান্দার হক, দেশের হক, প্রতিষ্ঠানের হক সবকিছুই বিবেচনার সঙ্গে নিই, যা আমি আমার বাবার কাছ থেকে শিখেছি। আর সে কারণেই হাসিমুখে আল্লাহর কাছে ফিরে যাব বলে আশা করি।’

সাদাসিধে জীবন

শিল্পপতি হয়েও অত্যন্ত সাধারণ জীবনযাপনে অভ্যস্ত সুফি মিজান। বিলাসিতা একেবারেই টানে না তাকে। ঘুরেফিরে এক পোশাকই পরেন তিনি। তার প্রিয় খাবার ডাল, ভাত, আলু ভর্তা ও ডিম ভাজি। সঙ্গে একটি শুকনা মরিচ ভাজাও। স্ত্রী তাহমিনা রহমানও তার মতোই। সাত ছেলে, এক মেয়ে তাদের। চট্টগ্রামের মাত্র ১৩-১৪০০ স্কয়ার ফিটের বাড়িতে থাকেন তিনি। সুফি মিজান বলেন, ‘আমি প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে জেগে বিছানা থেকে পা রেখেই বলি, হে আল্লাহ! তোমার জমিন, তোমার বাতাস, তোমার আলো। একদিন আমি এখানে ছিলাম না, থাকবও না। কেন এলাম, কীই বা জীবনের উদ্দেশ্য?’ বাবার কাছ থেকে সততা, সাম্য ও সরলতার শিক্ষা পেয়েছেন তিনি। বললেন, ‘আমার বাবা বলতেন, “ভালো মানুষের জুতা ছাপ করে দেবে, তাতেও সম্মান আছে। কখনো খারাপ মানুষ, দুশ্চরিত্র মানুষের সরদার হয়ো না”।’

নারীদের অন্য রকম সম্মান করেন এই অনন্যসাধারণ মানুষটি। ব্যবসার শুরুতেই যখন একের পর এক সফলতা পাচ্ছিলেন তখনই এক পীর সাহেবের সান্নিধ্যে এমন শিক্ষা পেয়েছিলেন তিনি। তার বর্ণনায়, ‘আমি চাকরি ছেড়ে যখন ব্যবসা শুরু করলাম, তখন ব্যবসার জন্য দেশ-বিদেশ যেতে হতো। ভরা যৌবন আমার। একদিন আমার পীর সাহেব আমাকে ডাকলেন। কাছে বসালেন।

বললেন, “মিজানুর রহমান সাহেব।” জি হুজুর। “আপনি তো দেখছি ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য দেশ-বিদেশ বহু জায়গায় যান।” জি। “বাবা! জীবনে অনেক মেয়েমানুষের সান্নিধ্যে আসতে হবে। মনে রাখবেন, অনলি অ্যাকসেপ্ট ইউর ওয়াইফ”।’ সুফি মিজান বলেন, ‘আমার কাছে আমার স্ত্রী ছাড়া যে কোনো মেয়ে, যদি তিনি আমার বয়সে বড় হন, তবে মায়ের মতো, সমবয়সী হলে বোন, ছোট হলে মেয়ের মতো। আমি মনে করি, পৃথিবীর প্রতিটি পুরুষ যদি এটি হৃদয়ে ধারণ করত তবে কোনো নারীই কখনো ক্ষতিগ্রস্ত হতো না… কিসের ইভ টিজিং, কিসের কী!’

ব্যাংকার থেকে ব্যবসায়ী

দাদা ছিলেন ব্যবসায়ী। পাটের ব্যবসা করতেন। সে সময় চার-পাঁচশ মণের কয়েকটা নৌকা ছিল তাদের। তার বাবাও ব্যবসা করতেন। কিছু খেত-খামারও ছিল। সেখানে ধান-পাট চাষ হতো। সুফি মিজানের ইচ্ছা ছিল শিক্ষক হবেন। কিন্তু তার বাবা বললেন, ‘তুমি ব্যবসা করবে।’ কিন্তু টাকা? তখন বাবা বললেন, ‘ইফ ইউ নো দি বিজনেস, মানি উইল রান আপ টু ইউ।’

তার পরও মাত্র ১০০ টাকা বেতনে চাকরি শুরু করেছিলেন সুফি মিজান। এখনকার হিসাবে মাত্র ১ ডলার ২০ সেন্টস। ইন্টারমিডিয়েট পাসের পরপরই ১৯৬৫ সালে সর্বপ্রথম তৎকালীন ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানে (বর্তমানে সোনালী ব্যাংক লিমিটেড) চাকরি নিয়ে চট্টগ্রাম গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে দুই বছর চাকরি করার পর ’৬৭ সালেই আরেকটি ব্যাংকে যোগ দেন। তবে স্বাধীনতার পরপরই চাকরি ছেড়ে দিলেন। তখন ব্যবসার জন্য তার মূলধন ছিল মাত্র ১ হাজার ৪৮৩ টাকা। এই মামুলি টাকা দিয়েই ব্যবসা শুরু করেছিলেন তিনি।

সুফি মিজানের মতে, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে ব্যবসায়ীর সংখ্যা অনেক কমে গেল। কেননা বেশির ভাগ ব্যবসায়ীই ছিলেন নন-বেঙ্গলি। যারা ইন্ডিয়া ও পাকিস্তান থেকে এসেছিলেন, তারাই ব্যবসা জানতেন। তৎকালীন আদমজী, বাওয়ানী, দাউদের মতো বড় বড় সব শিল্প কারখানাই ছিল তাদের। স্বাধীনতার পর যখন তারা নিজেদের দেশে ফিরে গেলেন তখন ব্যবসা ক্ষেত্রে বিশাল একটি শূন্যতা তৈরি হলো। ঠিক এই সময়টাকে কাজে লাগালেন মিজানুর রহমান। বেশ কয়েক বছর ব্যাংকে কাজ করে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিশেষ করে এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট বিজনেসটা ভালো করে শেখার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি।

জেনেছিলেন কোন দেশে কোন জিনিস তৈরি হয়, কোন দেশের ভালো জিনিস কম দামে পাওয়া যায়, আবার নিজের দেশে কোন সিজনে কোন জিনিস ভালো দামে বিক্রি হয়। এসব কিছুর সম্যক ধারণা নিয়েছিলেন ব্যাংকে চাকরির সময়। আর সে কারণেই দেশ-বিদেশ থেকে এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যবসার মাধ্যমে ব্যবসায়িক জীবন শুরু করেছিলেন মিজান সাহেব। প্রথম দিকে জাপান থেকে টায়ারটিউব, মিল্ক পাউডার, সুতা, পুরনো কাপড়, স্পেয়ার পার্টস, মোটর পার্টস প্রভৃতি আমদানি করতেন তারা। সেখানে সফলতার পর পরই ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে যান। এরপর আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি। পেয়েছেন একের পর এক সফলতা।

যে মন্ত্রে মিরাকল

Divine Blessings Mixed with Hard Work Backed by Good Intension can Make Miracle— এই মন্ত্রেই বিশ্বাসী সফল ব্যবসায়ী উদ্যোক্তা সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। এ সত্যকেই ভিতরে লালন করেন তিনি। বলেন, ‘আপনি যদি আল্লাহর দয়া পেতে চান, তবে আপনাকে একজন ভালো মানুষ হতে হবে। আপনাকে পরোপকারী হতে হবে। ধার্মিক হতে হবে। হতে হবে সৎ, পরিশ্রমী ও দেশপ্রেমিক। তবে তা কাউকে দেখানো কিংবা বাহ্বা পাওয়ার জন্য নয়, মনের গভীর আকুতি থেকে। নিজেকে কাজের মধ্যে উজাড় করে দিতে হবে। আর যে মানুষ যত বেশি মানুষের জন্য কাজ করে, বিধাতা তাকে তত বেশি বড় করেন।’

স্বপ্ন

বাংলাদেশ নিয়ে, নিজের পিএইচপি ফ্যামিলি নিয়ে এখনো অনেক স্বপ্ন দেখেন এই স্বপ্নদ্রষ্টা। তিনি বলেন, ‘আমি চাই বাংলাদেশের কোনো মা-বোন যেন ক্ষুধার তাড়নায় কষ্ট না পায়। প্রতিটি কোমলমতি সন্তান যেন শিক্ষার আলোয় আলোকিত হয়। যেন চিকিৎসার অভাবে কোনো মানুষ অকালে মৃত্যুবরণ না করে। প্রতিটি মানুষের যেন থাকার মতো একটি ছোট্ট কুটির আর চলার মতো একটি ছোট্ট ট্রান্সপোর্ট থাকে।’

পিএইচপি ফ্যামিলি নিয়েও একই স্বপ্ন দেখেন তিনি।

এই ফ্যামিলির প্রতিটি মানুষ যেন থাকার মতো একটি ছোট্ট বাড়ি ও চলার মতো একটি নিজস্ব ট্রান্সপোর্ট পায়। তিনি বলেন, ‘আমরা ব্যবসা ক্ষেত্রে সফল, তার পরও কিছু আকুতি থেকে গেছে। আমরা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অনেকটা অবদান রাখতে পেরেছি। বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি, যা আমাদের আগে আর কেউ নিতে পারেনি। কিন্তু এখনো কিছু স্বপ্ন পূরণ বাকি আছে। যার একটি হলো, বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বেসিক স্টিল মিলস মেকার হিসেবে দেখতে চাই।’

অপার সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ

বাংলাদেশে প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই অপার সম্ভাবনা খুঁজে পান সুফি মিজান। তার মতে এই দেশটি সম্ভাবনায় পরিপূর্ণ। ব্যবসার জন্য বাংলাদেশের মতো এমন সুযোগ পৃথিবীর আর কোথাও নেই। তিনি বলেন,‘ স্বাধীনতার পর আমাদের বলা হতো বটমলেস বাস্কেট। আজ আমাদের রিজার্ভ ৩০ বিলিয়নের ওপরে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় কিছুদিন আগে আইটি সেন্টার উদ্বোধন করেছেন।

প্রতি বছর শুধু সেখান থেকেই ১ বিলিয়ন এক্সপোর্ট করা সম্ভব হবে। এ রকম আরও যদি ৫০টি গ্রুপ আসে, ৫০ বিলিয়ন হবে। বেশি দিন বাকি নেই যেদিন বাংলাদেশ ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।’ তার মতে, বাংলাদেশের মতো এত অল্প পয়সায় আর অন্য কোথাও শ্রমিক পাওয়া যায় না। এত বুদ্ধিমান, দক্ষ, কর্মঠ জাতি আর কোথাও নেই। এই মানুষগুলোকে কেবল সুযোগ দেওয়া দরকার। দরকার আনন্দ-উৎসাহ ও সুন্দর একটা পরিবেশ দেওয়া; যার অভাব এখনো বাংলাদেশে আছে বলে তিনি মনে করেন।

নতুন উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান

নতুন যারা ব্যবসায় আসতে চান তাদের জন্য সফল এই ব্যবসায়ী উদ্যোক্তার আহ্বান— কঠিন পরিশ্রম ও তপস্যা করতে হবে। তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশে সুফি মিজান বলেন, এই মুহূর্তে যে কাজটি করছ মনের মাধুরী মিশিয়ে কর। যারা ব্যবসা বিষয়ে একাডেমিক শিক্ষা নিচ্ছ তারা সেখানে সফলতা দেখাও। তাহলে বিজনেসে এসেও সফল হবে। জীবনে বড় হতে হলে বড় বড় স্বপ্ন দেখতে হবে। আর সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে কঠিন পরিশ্রম ও তপস্যা করতে হবে।

বিশ্বের জ্ঞানতাপস সক্রেটিসের উদাহরণ টেনে সুফি মিজান বলেন, একবার সক্রেটিসের কাছে একজন জানতে চাইলেন, ‘স্যার আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ মানুষ কে? আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় কিংবা শ্রেষ্ঠ কাজ কোনটি?’ প্রতি উত্তরে সক্রেটিস বললেন, ‘এই মুহূর্তে তুমি যে কাজটি করছ সেটিই তোমার জীবনের শ্রেষ্ঠ কাজ। এই মুহূর্তে তুমি যার সামনে আছ তিনি তোমার জীবনের শ্রেষ্ঠ মানুষ। আর মানুষের জন্য কিছু করা তোমার শ্রেষ্ঠ কাজ।’ সক্রেটিসের এই কথা যদি কেউ মেনে চলতে পারেন, তবেই না একজন সত্যিকারের মানুষ হতে পারবেন। ফের উদাহরণ টেনে মিজানুর রহমান বলেন, মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র বলেছেন, ‘ডার্কনেস ক্যান নট বি রিমুভড বাই ডার্কনেস।

অনলি লাইট ক্যাপন ডু দ্যাট। হেইট ক্যান নট বি রিমুভড বাই হেইট। অনলি লাভ ক্যান ডু দ্যাট।’ হজরত আলী (রা.)ও তার জীবন থেকে এমন অনেক শিক্ষাই আমাদের জন্য রেখে গেছেন।

পিএইচপি Group নয়, Family

সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান গর্ব করে বলেন, অন্যসব বড় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মতো পিএইচপি কোনো গ্রুপ নয়, ফ্যামিলি। ফ্যামিলির মতোই এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন হাজার হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী। তিনি বলেন, ‘আমাদের তো অনেক প্রতিষ্ঠান আছে। কিন্তু আমরা হরতাল কাকে বলে, স্ট্রাইক কাকে বলে কখনো বুঝিনি। এখানকার সবাই আপন মনে হাসিমুখে কাজ করতে পারে। সুইপার, পিয়ন কিংবা প্রেসিডেন্ট সবাই এখানে এক। বিভিন্ন ধরনের স্টিল, গ্লাস, অ্যালুমিনিয়াম, শিপ রিসাইক্লিং, টেক্সটাইল, পেট্রলিয়াম প্রোডাক্টস, বিদ্যুৎ উৎপাদন, কৃষিজাত পণ্য, লেদার, ফিশারিজ, রিয়েল এস্টেটসহ বর্তমানে বিভিন্ন সেক্টরে ব্যবসা রয়েছে সুফি মিজানুর রহমানের। পিএইচপি ফ্যামিলির আওতায় দেশে-বিদেশে অন্তত ৩০টি আলাদা কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান রয়েছে এই বিশিষ্ট শিল্পপতির।

সহকর্মীদের চোখে সুফি মিজান

সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান সহকর্মীদের কাছে অন্য রকম এক আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব। প্রায় ১৭ বছর ধরে তাকে কাছ থেকে দেখছেন সুফি মিজানের ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেস—ইউআইটিএসের উপাচার্য ড. মো. সোলাইমান। বললেন তার অভিজ্ঞতার কথা। তিনি বলেন, সুফি সাহেব বিশ্বাস করেন মানুষকে লাখে লাখে দিলে ঝাঁকে ঝাঁকে আসে। তিনি বড় বড় স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসেন। কঠোর পরিশ্রম দিয়ে তা পূরণ করে ছাড়েন।

তার সততা ও সরলতার প্রমাণ দিতে গিয়ে এক বিশেষ ঘটনা তুলে ধরেন ড. সোলাইমান। বলেন, একবার একটি ট্রেনিং সেন্টার উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন সুফি মিজানুর রহমান। তাকে ফিতা কাটতে দেওয়া হলো। তিনি নিজে ফিতা না কেটে হঠাৎ পাশেই কর্মরত সুইপারকে ডেকে ফিতা কাটালেন। বললেন ইনি আমার মা। এমন অনেক ঘটনাই ঘটান তিনি। মিজান সাহেবের অফিসে সবাই একসঙ্গে খাবার খান। লাঞ্চের সময় সবার জন্য একই পাত্রে একই খাবার রান্না হয়। পুরো ক্যান্টিনের খাবার তিন ভাগে ভাগ হয়। সুইপার থেকে শুরু করে ওই শ্রেণির সবার জন্য এক ভাগ। অফিসের অন্য সাধারণ কর্মীদের জন্য এক ভাগ এবং তার নিজেরসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জন্য এক ভাগ। সবার জন্যই একই খাবার। এই সহকর্মী আরও জানান, সুফি সাহেব কেবল নিজেই এমন নন, তার সব সন্তানকেও একই রকম করে মানুষ করেছেন তিনি।

তথ্যসুত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন ডটকম।

29
Company Registration(RJSC) / Foundation Registration Guideline
« on: March 03, 2018, 01:21:08 PM »

ইসতিয়াক আহমেদ এবং তার ৮ জন বন্ধু মিলে বাল্য বিবাহের কুফল সম্পর্কে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য একটি সংগঠন করতে চাচ্ছে। তারা তাদের এই কার্যক্রম সুধু তাদের এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে ক্রমান্বয় পুরো দেশ ব্যাপী তাদের এই সমাজ সেবা ছড়িয়ে দিতে চাচ্ছে। কিন্তু তাদের এই সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য তারা প্রথমেই বাংলাদেশ সরকারের থেকে অনুমোদন নিয়ে নিতে চাচ্ছে কিন্তু তারা জানে না কোথায় থেকে কিভাবে তারা এই ধরনের সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সরকারিভাবে অনুমোধন নিবেন?

তো চলুন এখন আমি আপনাদের দেখাবো কিভাবে একটি সেবামূলক সংগঠনকে সরকারিভাবে রেজিস্ট্রেশন নিতে হয়?

জেকোন সেবামূলক সংগঠন যদি একাধিক জেলাতে বা দেশ ব্যাপী তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে চাই তবে উক্ত সংগঠনকে জয়েনস্টোক থেকে, সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন এ্যাক্ট এর মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হবে , এটিকে অনেকেই ফাউন্ডেশন বলে থাকে আবার অনেকে সোসাইটি বলে থাকে কিংবা অনেকেই সংগঠন নামেও ডেকে থাক

যাইহোক জয়েনস্টোক থেকে, সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন এ্যাক্ট এর মাধ্যমে কোন সংগঠন নিবন্ধিত হলে উক্ত সংগঠনের নামে অন্য কেউ সংগঠন পরিচাওলনা করতে পারবে না। এছাড়া উক্ত সংগঠন চাইলে দেশের মধ্যে থেকে চাঁদা বাবদ অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে এছাড়া আরো অনেক সুযোগ সুবিধা ভোগ করবে যদি কোন সংগঠন এই আইনে আওতায় নিবন্ধিত হয়ে থাকে

তো চলুন প্রথমেই দেখি সোসাইটি এ্যাক্ট এ রেজিস্ট্রেশনের জন্য কি কি লাগবেঃ

১. অন্তত ৭ জন সদস্য থাকতে হবে
২. সকল সদস্যেকে প্রাপ্ত বয়স্ক হতে হতে হবে
৩. সকল সদস্যের NID বা জন্ম নিবন্ধন সনদ লাগবে
৪. সকল সদস্যের পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে

উপরোক্ত সবগুলো উপাদান থাকলে সর্বপ্রথম আপনাদের ফাউন্ডেশনের নামের ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে হবে, মনে রাখবেন আপনার পছন্দের নামটি অন্য কোন ফাউন্ডেশন যদি ব্যবহার করে , থাকে তবে আপনি আর সেই নামটি পাবেন না। এছাড়া নামের ছাড়পত্র পাওয়ার জন্য অরো অনেক নিয়মকানুন আছে

যাইহোক আপনার পছন্দের নামটি খালি আছে কিনা তা নিচের ওয়েব সাইট থেকে যাচাই করে দেখুন http://app.roc.gov.bd:7781/psp/nc_search

১. এখানে আপনার পছন্দের নামটি খালি থাকলে উক্ত নামের ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে হবে
২. এরপর আপনাদের পছন্দের নামটি রেজিস্ট্রেশনের জন্য নির্ধারিত ফি ব্যংকে প্রদান করতে হবে, নির্ধারিত ফি প্রদানের ২ দিনের মধ্যে আপনার নামের ছাড়পত্র পাওয়া যাবে
৩. নামের ছাড়পত্র পাওয়ার পর এবার আপনাদের ফাউন্ডেশনের গঠনতন্ত্র প্রস্তুত করতে হবে। ফাউন্ডেশনের গঠনতন্ত্রে হল আপনাদের ফাউন্ডেশনটি কিভাবে পরিচালিত হবে, কিভাবে নির্বাচন হবে, কে কোন পদে থাকবে, কিভাবে হিসাব রক্ষিত হবে ইত্যাদি নানা বিষয় উক্ত গঠনতন্ত্রে উল্লেখ থাকবে

এই গঠনতন্ত্রটি খুব গুরুত্তপূর্ন তাই এই গঠনতন্ত্রটি অবশ্যই একজন দক্ষ আইনজীবীর মাধ্যমে প্রস্তুত করাতে হবে

৪. ফাউন্ডেশনের গঠনতন্ত্র প্রস্তুত করার পর এবার আপনাদের ফাউন্ডেশনের রেজিস্ট্রেশন ফি ব্যংকে প্রদান করতে হবে। সবশেষে নামের ছাড়পত্রের কাগজ, ফাউন্ডেশনের গঠনতন্ত্র, রেজিস্ট্রি ফি, সদস্যদের পরিচয়পত্র সহ অন্যান্ন সকল কাগজপত্র একত্রে জয়েনস্টোকে জমা দিতে হবে

৫. জয়েনস্টোকে রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদনের পর আপনাদের ফাউন্ডেশন গঠনের প্রকৃত উদ্দেশ্য এবং উদ্যোক্তাদের ব্যক্তিগত তথ্য যাচাইয়ের জন্য NSI একটি তদন্ত করবে। NSI যদি আপনাদের ফাউন্ডেশন সম্পর্কে পজেটিভ রিপোর্ট দেয় তবে জয়েনস্টোক থেকে আপনাদের রেজিস্ট্রেশন লাইসেন্স প্রদান করবেন।

ফাউন্ডেশনের লাইসেন্স সরকারিভাবে পাওয়ার পরে আপনারা আনুষ্ঠানিকভাবে আপনাদের ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন।

তথ্যসুত্র: বিডি আইনকানুন ডটকম।

30
Business Legal Act / Cheque Dishonor Law in Bangladesh
« on: March 03, 2018, 01:11:40 PM »

মনে রাখতে হবে, শুধু অপর্যাপ্ত তহবিলের কারণে চেক প্রত্যাখ্যাত হলে তখনই হস্তান্তরযোগ্য দলিল আইন, ১৮৮১-এর ১৩৮ ধারায় মামলা করা যায়।

অন্যসব ক্ষেত্রে আদালত কর্তৃক আইনি নোটিশ দিয়ে এবং ওই নোটিশের মেয়াদ শেষে দ-বিধির ৪০৬ ও ৪২০ ধারায় মামলা করা যায়। অপর্যাপ্ত তহবিল ছাড়া প্রতারিত হলে যেমন অঙ্কে ও কথায় গরমিল, চেকে তারিখ ঠিকমতো না লেখা, প্রদানকারী কর্তৃক পরিশোধ বন্ধ করা ইত্যাদি কারণে চেক প্রত্যাখ্যাত হলে দ-বিধির ৪০৬ এবং ৪২০ ধারায় মামলা করলে তিন থেকে সাত বছর পর্যন্ত জেল এবং আর্থিক জরিমানা হতে পারে। তবে এসব কারণে চেক ডিজঅনারের মামলা করা যায় না।

আবার যদি কোনো ব্যক্তি চেকে নিজের স্বাক্ষর অসদুদ্দেশ্যে নিজেই জাল করে তাহলে দ-বিধির ৪৬৫ ধারা অনুযায়ী দুই বছরের জেল ও জরিমানা উভয় হতে পারে।

মামলা কোথায় করতে হয়? এ ধরনের অভিযোগ একটি নালিশি বা সিআর মামলা হিসেবে মহানগর এলাকার ক্ষেত্রে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে আর মহানগরের বাইরে হলে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে দায়ের করতে হবে।

চেকটি যে ব্যাংকে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে, সেটি যে আদালতের এখতিয়ারের মধ্যে রয়েছে সেই আদালতে মামলা দায়ের করতে হবে। দায়রা আদালত ইচ্ছা করলে যুগ্ম দায়রা আদালতে মামলাটি বিচারের জন্য পাঠাতে পারেন।

প্রতিটি চেকের মেয়াদ থাকে ৬ মাস অর্থাৎ চেকে যে তারিখটি বসাবেন, সেই তারিখ থেকে পরবর্তী ৬ মাস পর্যন্ত উক্ত চেকটি দিয়ে আপনি ব্যংক থেকে টাকা তুলতে পারবেন। মনে করুন এই চেকটিতে তারিখের স্থানে লেখা আছে ১/৪/২০১৬ তাহলে এই চেকটি দিয়ে আপনি ৩০/১০/২০১৬ তারিখ পর্যন্ত টাকা তুলতে পারবেন। আর এই ৬ মাসের মধ্যে যদি আপনি চেকটি ব্যংকে জমা না দিতে পারেন, তবে উক্ত চেকটি দিয়ে আপনি আর টাকা তুলতে পারবেন না ।

তো মনে করি আপনি চেকটি ৬ মাস মেয়াদের মধ্যেই অর্থাৎ ১/৫/২০১৬ তারিখে ব্যংকে জমা দিলেন। কিন্তু ব্যংক থেকে আপনাকে বল্ল উক্ত ব্যংক একাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা নেই, এবং তারা আপনাকে চেকটি ফেরত দিয়ে দিল।

১. প্রথমে উক্ত ব্যাংক থেকে একটি চেক ডিজনার রসিদ নিবেন
২. উক্ত ডিজনার রসিদে চেকটি ডিজনার হওয়ার তারিখ এবং ডিজনার হওয়ার কারন উল্লেখ থাকবে এর পরে আপনাকে উক্ত ডিজনারের তারিখ থেকে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে চেক প্রদান কারীর বরাবর একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠাতে হবে।

উক্ত নোটিশে আপনি তাকে অবহিত করবেন যে, তার প্রদত্ত চেকটি ব্যংক থেকে ডিজনার হয়েছে এবং উক্ত নোটিশে তাকে আল্টিমেটাম দিতে হবে যেন সে আপনার পাওনা টাকা নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে পরিশোধ করে দেয় অন্যথায় আপনি তার বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন তো ধরে নিলাম আপনি লিগ্যাল নোটিশটি পাঠিয়েছেন ১০/৫/২০১৬ তারিখে অর্থাৎ চেকটি ডিজনার হওয়ার ১০ দিন পরে আপনি চেক দাতার বরাবর একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠালেন এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো লিগ্যাল নোটিশ পাঠানের তারিখ থেকে পরবর্তী ৩০ দিন পর্যন্ত আপনি চেক প্রদানকারীকে আপনার পাওনা টাকা পরিশোদের জন্য সময় দিতে হবেএই সময়ের মধ্যে আপনি তার বিরুদ্ধে চেকের মামলা করতে পারবেন না

অর্থাৎ ১০/৬/২০১৬ তারিখ পর্যন্ত আপনাকে অবশ্যই, চেক প্রদানকারীকে টাকা পরিশোধের জন্য সময় দিতে হবে এবং অন্তত ৩০ দিন অপেক্ষা করতে হবে ৩০ দিন সময় অতিবাহিত হওয়ার পরেও যদি, চেক প্রদানকারী আপনার পাওনা টাকা পরিশোধ না করে তবে এবার আপনি চেক প্রদানকারীর বিরুদ্ধে নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট আইনে মামলা করতে পারবেন

যে দিন থেকে আপনার চেকটি মামলা করার অধিকারী হলো সেই দিন থেকে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে আপনাকে অবশ্যই মামলাটি করতে হবে অন্যথাই আপনি আর নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট আইনে মামলা করতে পারবেন না

এখানে দেখুন আপনি লিগ্যাল নোটিশটি পাঠিয়েছেন ১০/৫/২০১৬ তারিখে আর চেকটি মামলা করার অধিকারী হল ১০/০৬/২০১৬ তারিখে আপনাকে ১০/০৭/২০১৬ তারিখের মধ্যে অবশ্যই নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট আইনে আইনে চেক ডিজনারের জন্য মামলা করতে হবে। আর যদি এই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আপনি মামলা না করতে পারেন তবে আপনি আর নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট আইনে মামলা করতে পারবেন না।

তবে আপনি চেকের মাধ্যমে টাকা আদায়ের জন্য মানি স্যুটের মামলা করতে হবে এই মামলা অনেক দুর্বল একটি মামলা এবং এই মামলা করে টাকা আদায় করা অনেক সময় সাদ্য ব্যপার তো ধরেনিলাম আপনি চেকটি দিয়ে ২৫/৬/২০১৬ তারিখে নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট আইনে মামলা করলেন।

তাহলে সংক্ষেপে যদি বলি একটি চেক দিয়ে নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট আইনে মামলা করতে হলে প্রথমে আপনাকে ব্যংক থেকে চেকটি ডিজনার করাতে হবে । উক্ত ডিজনারের তারিখ থেকে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে আপনাকে চেক প্রদানকারীর বরাবর একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠাতে হবে । লিগ্যাল নোটিশ যেদিন পাঠাবেন সেই দিন থেকে পরবর্তী ৩০ দিন আপনি চেক প্রদানকারীকে টাকা পরিশোধের সময় দিতে হবে । এবং যদি এই ৩০ দিনের মধ্যে চেক প্রদানকারী আপনার টাকা পরিশোধ না করতে পারে তবে ৩০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে অবশ্যই আপনি চেকটি দিয়ে নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট আইনে মামলা করতে হবে।

তথ্যসুত্র: বিডি আইনকানুন ডটকম।

Pages: 1 [2] 3