Author Topic: BLOG সফল ব্যবসার গোপনমন্ত্র: ডেটা ড্রিভেন বিজনেস  (Read 2642 times)

mehnaz

  • Newbie
  • *
  • Posts: 3
  • Karma: +0/-0
    • View Profile
  সফল ব্যবসার গোপনমন্ত্র: ডেটা ড্রিভেন বিজনেস




বর্তমান সময়ে,বিশ্বের যত শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি আছে যেমন (IBM, Google, Amazon, Facebook) তারা সবাই ব্যবসার সিধান্ত নিতে ডেটা ব্যবহার করে থাকে।

আর এ কথাতো কম বেশি আমরা সবাই জানি যে, আজকের পৃথিবীতে আমরা বলতে গেলে ডেটার মাঝে ঢুবে আছি। সেখানে একটি ব্যবসাকে সফলভাবে দাঁড়া করাতে গেলে ডেটার সাহায্য যে নিতে হবে তাতো বলাই বাহুল্য…
তাহলে আসুন জেনে নিয়া যাক ডেটা ড্রিভেন বিজনেস সম্পর্কে !!

ডেটা ড্রিভেন বিজনেস কি?

প্রতিটি ব্যবসা বা অর্গানাইজেশন চালাতে বিভিন্ন ধরনের প্রচুর তথ্যের প্রয়োজন হয়ে থাকে। এখন যদি ব্যবসাটির কৌশল, পরিকল্পনা এবং বিভিন্ন ধরনের অপারেশন এসব তথ্য ব্যবহার করে নির্ধারণ করা হয়ে থাকে তবে সেটিকে আমরা বলবো ডেটা ড্রিভেন বিজনেস। ব্যবসার সাথে জড়িত বিভিন্ন ধরনের প্রাসঙ্গিক তথ্য বিশ্লেষণ এবং মূল্যায়ন করে একটি উপসংহার  বা সিধান্ত গঠন করা যায়,তার সাথে ভবিষ্যতে কি হতে যাচ্ছে তার একটি  পূর্বাভাস ব্যক্ত করা যায়। এ জন্য প্রয়োজনীয় সকল প্রকার তথ্য নিয়মিতভাবে সংরক্ষণ করতে হবে এবং তথ্য সেট থেকে কিভাবে যাবতীয় ইনফর্মেশন বের করে আনা যায় যে বেপারে অরগানাইজেশনে দক্ষ জনবল ও থাকতে হবে।
সম্প্রতি “Sloan School of Business” কর্তৃক পরিচালিত একটি গবেষণাইয় দেখা গেছে  যে, “যে কোম্পানিগুলি তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের অভিজ্ঞতার সাথে জড়িত তাদের  উৎপাদনশীলতা ৬% বেশী”

প্রয়োজনীয়তাঃ

এবার আসুন জেনে নেয়া যাক এর কিছু প্রয়োজনীয়তাঃ

  • ডেটা বিশ্লেষণ করে তদনুযায়ী কার্যকর ইনফ্রাস্ট্রাকচার তৈরি করার মাধ্যমে কার্যকর ব্যবসা কৌশল বাস্তবায়ন করা যায়।
  • প্রতিযোগিতার এই বাজারে ব্যবসাকে এক ধাপ এগিয়ে রাখতে সাহায্য করে।
  • তথ্যের উপর ভিত্তি করে কি জাতীয় পণ্য বাজারে আনা যায় তা নির্ধারণ করা সহজ হয়।
  • গ্রাহক সেবা উন্নত করা যায়, এ ব্যপারে তথ্য যাচাই বাছাই করে ভিন্ন ভিন্ন উদ্ভাবনী প্রকল্প হাতে নেয়া যায়।
    • গ্রাহক দের মানসিকতা,চাহিদা বুঝতে এবং সে অনুযায়ী কাজের স্কেচ তৈরী করতে ডেটা অ্যানালিটিক্স খুবি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।
      • নতুন গ্রাহক সংযোজনে সাহায্য করে।
      • অর্থনীতির কিছুর উল্ল্যেখ-যোগ্য দিক যেমনঃ মার্জিন বৃদ্ধি করে, অপচয় হ্রাস করে।
        • ডেটা থেকে ব্যবসার সুবিধাগুলো হাইলাইট করে।
        • পরবর্তী ট্রেন্ড কি হতে যাচ্ছে আগে থেকেই অবহত হয়া যায়।
        • বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক সিধান্ত নিতে সাহায্য করে।
        • ডেটা ড্রিভেন বিজনেসের আরেকটি প্লাস পয়েন্ট হলো এটা সুবিধার পাশাপাশি অসুবিধাও প্রেডিক্ট করা যায়।
          • যেহেতু সমস্যা গুলো আগেভাগেই ধারনা করা যায় সে অনুযায়ী ব্যবস্থাও গ্রহন করা যায়।
            • ন্যূনতম ক্ষতি মার্ক করে দ্রুত সিন্ধান্ত নেয়া যায়।

            সর্বোপরি,প্রায় প্রতিটি ব্যবসারই লক্ষ্য হল-“মুনাফা অর্জন”। ডেটা ড্রিভেন প্ল্যানের মাধ্যমে এই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব। কেননা, এর সাহায্যে হাইপার-কার্যকর কৌশল অবলম্ব করা যায়।
            আর এসব কৌশল মূল্যনির্ধারণ থেকে শুরু করে বিক্রয় বৃদ্ধি সাথে সাথে গ্রাহক বজায় রাখে এবং সর্বোত্তম ব্যবসা অবকাঠামো স্থাপন করে।
             
            আইরনসাইড গ্রুপের ওয়েবসাইটের একটি কেস স্টাডিজ থেকে পাওয়া গেছে যে, “যেসকল প্রতিষ্ঠান ব্যবসা বুদ্ধিমত্তা, কর্মক্ষমতা ব্যবস্থাপনা এবং ভবিষ্যদ্বাণীপূর্ণ বিশ্লেষণের মতো এনালাইজং অ্যাপ্লিকেশন স্থাপনের  জন্যে ব্যয় করে থাকে তাতে সংস্থাটির ব্যয়িত প্রতিটি ডলারের বিপরীতে  গড় আয় $ 10.66 হয়ে থাকে”

            সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে যে,প্রতিযোগিতার এই যুগে নিজের ব্যবসার বা অর্গানাইজেশন এর অবস্থান ভালো পর্যায়ে নিয়ে যেতে তথ্য ভিত্তিক অবকাঠামোর বিকল্প নেই।

            কীভাবে ব্যবসাকে ডেটা ড্রিভেন ব্যবসায় রুপান্তর করা যায়ঃ

ব্যবসার লক্ষ্য স্থাপনঃ

প্রথমেই আপনাকে আপনার ব্যবসার জন্যে একটি গোল সেট করে নিতে হবে, কতটুকু সময়ের মাঝে আপনি আপনার ব্যবসার আউটকাম কেমন দেখতে চান তার একতি স্কেচ দাড়া করাতে হবে। তারপর ফোকাস বজায় রাখার জন্যে কতটুকু তথ্য আপনার প্রয়োজন ততটুকু সংগ্রহ করতে হবে। যেমন মনে করুন আপনি একটি রেস্টুরেন্ট ব্যবসার সাথে জড়িত আপনি কোনো কম্বো ম্যেনুর উপর অফার দিতে চাচ্ছেন,সুতরাং সেক্ষেত্রে আপ্নারে ক্লাইন্টদের  মতামত সংগ্রহ করতে হবে,ক্লাইন্টদের চাহিদা বুঝতে হবে এবং লেনদেনের হিসাবের তথ্য ও সংগ্রহ করতে হবে।এক্ষেত্রে কিন্তু আপনার কোম্পানির কর্মচারীদের ডেটা কিন্তু কাজে আসছে না।

সৃজনশীলতাঃ

ডেটা নিয়ে আপনাকে অবশ্যই সৃজনশীল হতে হবে। ডেটা সোর্স, ডেটার কোয়ান্টিটি-কোয়ালিটি সম্পর্কে সম্মক ধারনা রাখতে হবে। চিন্তাগুলো সীমাবদ্ধ না রেখে ব্যবসার কাজের ধরন অনুযায়ী আভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক ডেটাগুলো চিনহিত করতে হবে।

এই ডেটাগুলো সংমিশ্রন বা আলাদা করে বিশুদ্ধ পর্যালোচনার মাধ্যমে ডেটা সেট থেকে ইনফর্মেশন বের করে আনতে হবে এবং সে অনুযায়ী আপনাকে গ্রাহকের চাহিদাগুলির কথা মাথায় রেখে  উদ্ভাবনী কৌশল তৈরি করতে সক্ষম হতে হবে।

বর্তমান সিস্টেম মুল্যায়নঃ

একটি ব্যবসার বিভিন্ন ফাংশনের জন্যে আলাদা সিস্টেম চালু থাকলে কিছু অকার্যকর অথবা ডুপ্লিকেট ডেটা উৎপন্ন হতে পারে।তাই বর্তমানে আপনি আপনার বিজনেসের জন্যে যে সলিউশন ব্যবহার করছেন সেটার বিস্তারিত কার্যপদ্ধতি ক্রস এনালাইস করতে হবে।সেটির প্রতিটি ইনপুট বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা আছে কিনা যাচাই বাছাই করতে হবে।তার উপর ভিত্তি করে আপনার সফ্টওয়্যারটি আপডেট , নতুন সফ্টওয়্যার ক্রয় এবং /অথবা অন্যান্য সমাধানগুলির সাথে এটি সংহত করতে হবে। সমস্ত বিভাগের বিশ্লেষণ প্রদানের জন্য সমস্ত তথ্যের উৎসগুলি সংযুক্ত করতে হবে।

সিস্টেমের সর্বোত্তম ব্যবহারঃ


আপনাকে মনে রাখতে হবে সর্বোত্তম ফলাফল পেতে হলে আপনাকে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করতে হবে।এটি অর্জন করার একমাত্র উপায় হল আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে যে  সিস্টেমগুলি ব্যবহার করা হচ্ছে সেগুলি পরিচালনা ,ব্যবহার এবং সঠিক পজিশনের মধ্যে রয়েছে কিনা।

নতুন বিভাগ গঠনঃ

কৌশলগত ব্যবসায়িক সিদ্ধান্তগুলি গ্রহন করতে ও জানাতে এবং তথ্যগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করতে আপনাকে একটি নতুন ও ছোট পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে- প্রথমেই একটি ডেটা এনালেটিক্স গ্রুপ বা বিভাগ তৈরী করতে হবে। যার কাজ হবে ডেটা সংগ্রহ,সংরখন,পর্যবেখন,বিশ্লেষণ এবং অন্যান্য বিভাগগুলিতে আরও ডেটা চালিত কৌশল, প্রযুক্তি , চর্চা শুরু করতে সাহায্য করা।

ডেটা অ্যাক্সেস বাড়ানোঃ

বসার কার্যকালাপ পরিচালনার জন্যে অবশ্যই রিয়েল-টাইম ডেটা ব্যভার করতে হয়। কেবল মাত্র কিচ্ছু বাধা-ধরা গদবাধা ডেটা দিয়ে মূল লক্ষ্যে কখনোই পৌছানো সম্ভব না।

আপনার সংস্থায় কর্মরত প্রত্যেকেরি তার প্রাসঙ্গিক ডেটার উপর এক্সেস থাকতে হবে,এনালাটিক্স বিভাগের ২৪/৭ এক্সেস থাকতে হবে এবং সমস্ত কর্মীদের ডেটাতে কোন অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা গেলে ব্যবস্থাপনা কমিটিকে তা জানাতে হবে। তথ্য অ্যাক্সেস বৃদ্ধির মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যবসা মডেল অর্জন করতে সক্ষম হবেন।

কর্মতৎপরতা:

প্রচলিত নিয়মে দেখা যায়, ব্যবসার সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে উত্পাদিত মাসিক এবং  বার্ষিক প্রতিবেদনগুলির জন্য অপেক্ষা করা হয় । কিন্তু  প্রতিযোগিতামূলক এ বাজারে টিকে থাকতে গেলে আপনাকে  একটি চটপটে ব্যবসা মডেল গ্রহন করতে হবে।কর্মততপর হতে হলে আপনাকে অভ্যন্তরীণ এবং বহিরাগত পরিবেশের পরিবর্তনের সাথে দ্রুত সিদ্ধান্ত করতে পারতে হবে। ইন্টারনেট প্রতি মুহূর্তে নতুন ধরনের নতুন রিয়েল-টাইম তথ্য তৈরি করছে, পরিবর্তনের হার বাড়াচ্ছে, তাই আপনাকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে এবং বাজারের অন্য কোনও ক্ষেত্রের পরিবর্তনগুলি সম্পর্কেও অবহিত হতে হবে।

এবং পরিশেষে…

একটি সফল ব্যবসা দাঁড় করাতে চাইলে ডেটা এবং বিশ্লেষণ আপনার ব্যবসার সাথে অংগাওঙ্গিভাবে জড়িত থাকতে হবে।অপরদিকে ডেটা এনালিটক্সকে আপনার ব্যবসার সকল দিক সম্পর্কে সম্যক ধারনা থাকতে হবে।

আপনি আপনার বিকাশমান ব্যবসায়িক মডেল বজায় রাখতে, পরিবর্তন ঘটাতে, সিদ্ধান্ত গ্রহণ বর্জন এবং উদ্ভাবনের পরিকল্পনা বিকাশে সহায়তা করার জন্য একটি ডেটা বিশ্লেষক নিয়োগ করতে পারেন।

আধুনিক ব্যবসা সফটওয়্যারের মাধ্যমে তথ্যগুলি ক্যাপচার এবং বিশ্লেষণ করা আগের তুলনায় অনেক সহজ।

শুধুমাত্র ডেটা নিয়ে একটু গবেষনার মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যবসায়িক পারফরম্যান্সকে খুব দ্রুত উন্নত করতে পারেন।

Written By
Mehnaz Tabassum
Department of Computer Science & Engineering
Daffodil International University

http://youthcarnival.org/bn/%E0%A6%B8%E0%A6%AB%E0%A6%B2-%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%97%E0%A7%8B%E0%A6%AA%E0%A6%A8%E0%A6%AE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0-%E0%A6%A1/

[/list][/list][/list][/list][/list][/list]